“গ্রাহক স্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” বলেন তিনি।
Published : 21 Apr 2025, 02:21 PM
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমাতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, “ইতোমধ্যেই সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম (ডেনস ওয়েভলেন্থ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) এবং ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে।
“এমতাবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না।”
চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমলে কিছুটা স্বস্তি আসবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সরকার মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলোকে পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তরগুলোতে পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের (অপারেটরদের) জাতীয় উদ্যোগে শরিক হবার পালা।”
ইন্টারনেট খাতের বিভিন্ন স্তরে দাম কমেছে জানিয়ে তৈয়্যব লিখেছেন, “বাকি আছে শুধুমাত্র মোবাইল সেবাদাতা তিনটি বেসরকারি কোম্পানির দাম কমানোর ঘোষণা।”
প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী লিখেছেন, “নতুন তিনটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমছে। ফাইবার অ্যাট হোমের ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করেছেন যে- আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন বা ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ মূল্য হ্রাস করবেন তারা।”
জানতে চাইলে ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক বলেন, “সরকার জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে যে মানসম্মত সেবা দিতে যাচ্ছে, আমরাও সরকারের সাথে সে যাত্রায় শরিক হচ্ছি। আমরা গুণগত মানসম্পন্ন সেবা জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই।”
তৈয়্যব বলছেন, “এর আগে ইন্টারনেট সেবাদাতা বা আইএসপি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ এমবির পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবি ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তারও আগে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সকল আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে।”
এখন তিন বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি অতি দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য ‘যৌক্তিকভাবে’ কমানোর ঘোষণা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তার ভাষায়, “সরকার এখানে দুই ধরনের মূল্য ছাড় আশা করে- প্রথমত মার্চ মাসে এসআরও অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ মোবাইল কোম্পানিগুলো যে মূল্য বাড়িয়েছিল, সেটা কমাবে (সরকার শুল্কবৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে তা থেকে সরলেও সেই অনুযায়ী বর্ধিত মূল্য কমায়নি মোবাইল কোম্পানিগুলো)। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক গেটওয়ে/আইটিসি, আইআইজি এবং ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যতটুকু পাইকারি দাম কমানো হয়েছে, তার সমানুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমাবে।”
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বানের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দাম কমানোর বিষয়ে কিছু বলেনি গ্রামীণফোন।
গ্রাহক সংখ্যায় দেশের বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটরটির হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স আংকিত সুরেকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইন্টারনেটের দাম কেবল একটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল নয়। বরং সম্পূর্ণ ভ্যালু চেইনে অনেকগুলো ধাপ বা উপাদান যেমন- স্পেকট্রাম, টাওয়ার, ফাইবার, বিদ্যুৎ ইত্যাদি জড়িত থাকে। যেগুলোর সম্মিলিত খরচের ভিত্তিতে চূড়ান্ত দাম নির্ধারিত হয়।
”তবুও গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে আমরা সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করছি কীভাবে কম দামে ভালো মানের সেবা দেওয়া যায়।”
টেলিযোগাযোগ খাতে উচ্চ করপোরেট করহারকে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
এ বিষয়ে রবি ও বাংলালিংকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
দেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মান নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে মন্তব্য করে তৈয়্যব লিখেছেন, “এখানে (মোবাইল ইন্টারনেটের) মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এমতাবস্থায় গ্রাহক স্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”