এখন থেকে একশ বছর আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি শিল্পকর্মের ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত এক কার্টুন।
ওই কার্টুনের নাম ‘ইরিলি’। ১৯২৩ সালে মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ডে এই হাস্য রসাত্মক কার্টুনটি আঁকেন এইচ টি ওয়েবস্টার নামের এক কার্টুন সম্পাদক। এটি ২০২৩ সালের এমন এক কাল্পনিক মেশিনের ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছিল, যা বিভিন্ন ধারণা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কার্টুন এঁকে ফেলতে পারে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট আর্স টেকনিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই কার্টুন এক শতাব্দী পরের অর্থাৎ সাম্প্রতিক ‘এআই ইমেজ সিন্থেসিসের’ অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছে, যা আসলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিল্পকর্ম তৈরি করতে পারে।
“২০২৩ সালে যখন আমাদের সকল কাজ বিদ্যুৎ শক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।” --ওই পুরোনো কার্টুনের ক্যাপশনে লেখা।
ওই ছবিতে এক কার্টুনিস্টকে তার আঁকার টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সামাজিক ঘটনার পরিকল্পনা তৈরি করতে দেখা যায়। এর ‘আইডিয়া ডায়নামো’ সুবিধা বিভিন্ন ধারণা তৈরি করতে পারে। আর ‘কার্টুন ডায়নামো’ সুবিধার মাধ্যমে শিল্পকর্মটি উপস্থাপন করা যায়।
চমপকপ্রদভাবে, এই সুবিধা দুটি অনেকটাই মিলে যায় ২০২৩ সালের বাস্তবতার সঙ্গে। এতে ‘আইডিয়া ডায়নামো’ হয়তো ‘জিপিটি-৩’-এর মতো (পুরোপুরি নয়) তুলনামূলক বড় আকারের ভাষা মডেল। আর ‘কার্টুন ডায়নামো’র সবচেয়ে বেশি মিল রয়েছে ‘স্টেবল ডিফিউশনের’ মতো ‘ইমেইজ-সিন্থেসিস’ মডেলের সঙ্গে।
২০১৪ সালে ওয়েবস্টারের কাজ বিশেষ করে এই কার্টুনের কথা উঠে আসে ব্লগ ভিত্তিক সাইট ‘পেলিওফিউচার’-এ। এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯২০-এর দশকের শুরুতে কেবল ৩৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিকদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল।
আর্স টেকনিকা বলছে, এই কার্টুনের মাধ্যমে বিদ্যুচ্চালিত বিভিন্ন ডিভাইসে কার্যক্রম পরিচালনার পুরোপুরি নতুন এক উপায় উপস্থাপিত হয়েছিল। বুধবার ১৮ জানুয়ারি রেডিটের একজন পুনরায় এই কার্টুন লক্ষ্য করার পর সামাজিক মাধ্যমে এটি ভাইরাল হয়ে যায়।
গত দুই বছরে উৎপাদনশীল এআই প্রযুক্তির খাত অনেকটা এগিয়ে গেলেও বিভিন্ন ইমেইজ-সিন্থেসিস মডেল এখনও প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোতে পারেনি। টুইটারে এই বিষয়টি প্রায়ই তুলে ধরেন ডগলাস বোনভিল নামের এক কার্টুনিস্ট।
মানুষের হাতে আঁকা কার্টুনের কৌশল রপ্ত করা বিভিন্ন এআই মডেলের কাছে এখন সময়ের ব্যাপার। আর ১৯০০ দশকের প্রথম দিকের ‘ব্যক্তিগত প্রজাপতির ডানা বা শহরব্যাপী বায়ুসংক্রান্ত টিউব’ সংশ্লিষ্ট ভবিষ্যদ্বাণীর চেয়ে ওয়েবস্টারের অনুমান মোটামুটি কাছাকাছি যাওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আর্স টেকনিকা।