‘স্যাজিটেরিয়াস এ*’ নামের ব্ল্যাকহোলটির অবস্থান আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের ঠিক মাঝখানে। আর এখানেই বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন এই জোড়া তারা’র সন্ধান।
Published : 18 Dec 2024, 02:36 PM
এই প্রথম বাইনারি বা জোড়া তারা’র সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, যা একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।
এ জোড়া তারার সন্ধান মিলেছে চিলি’র আটাকামা মরুভূমির ৮ হাজার ৬৪৫ ফুট বা ২ হাজার ৬৩৫ মিটার উঁচু পর্বত ‘সেরো পারানালে’ থাকা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র ‘ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ বা ভিএলটি’-এর সংগহ করা তথ্যে।
এদের বেগ পরিমাপ করে অবাক হয়েছেন এ আবিষ্কারের পেছনে থাকা গবেষণা দলটি। কারণ, এখানে একটি নয়, দুটি তারা রয়েছে।
‘স্যাজিটেরিয়াস এ*’ নামের ব্ল্যাকহোলটির অবস্থান আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের ঠিক মাঝখানে। আর এখানেই বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন এই জোড়া তারা’র সন্ধান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রস্থলে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের আশপাশেও থাকতে পারে গ্রহ। আর এদের সন্ধানের জন্য তৈরি হতে পারি আমরা।
প্রথমবারের মতো কোনো সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের কাছে জোড়া তারা খুঁজে পাওয়ার পর এই আশার আলো দেখা গেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এ আবিষ্কার কেবল এসব তারা কীভাবে এই ধরনের চরম পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে তার উপরই আলোকপাত করেনি, বরং বিজ্ঞানীরা সেখানে গ্রহও খুঁজে পেতে পারেন, সে ইঙ্গিতও দিয়েছে এটি।
এর আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের আশপাশের চরম পরিবেশেও তারা’র পক্ষে টিকে থাকা হয়ত সম্ভব। তবে ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি রয়েছে এমন তরুণ বিভিন্ন তারা থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, এমনটি সত্যি নয়। এমনকি জোড়া তারা’র ক্ষেত্রেও এই ধরনের পরিবেশে কেবল অল্প সময়ের জন্য টিতে থাকা সম্ভব হতে পারে।
এ পরিবেশে এলিয়েনদের বসবাসের উপযোগী গ্রহ টিকে থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলছেন, ‘ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ’ ও ‘এক্সট্রিমলি লার্জ টেলিস্কোপ’-এর উন্নত সংস্করণের যন্ত্রপাতি দিয়ে এ ধরনের গ্রহ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হতে পারে।
“সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের উপস্থিতি সম্পর্কে অনুমান করতে সাহায্য করেছে আমাদের এ আবিষ্কার। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরুণ তারা’র আশপাশে তৈরি হয়ে থাকে গ্রহ,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অফ কোলন’ এর গবেষক ফ্লোরিয়ান পেইকার।
“ব্ল্যাক হোল ততটা ধ্বংসাত্মক নয় যতটা আমরা ভেবেছিলাম। গ্যালাকটিক কেন্দ্রে গ্রহ খুঁজে পাওয়ার বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।”
‘এ বাইনারি সিস্টেম ইন দ্য এস ক্লাস্টার ক্লোজ টু দ্য সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল স্যাজিটেরিয়াস এ*’ শীর্ষক শিরোনামে গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ।