প্রায় এক শতাব্দী ধরে উজ্জ্বল বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজের আশপাশের বিভিন্ন উপাদান সক্রিয়ভাবে গিলে খাচ্ছে এফইউ ওরিওনিস।
Published : 02 May 2024, 05:48 PM
সম্প্রতি ওরিয়ন তারামণ্ডলে থাকা বিশেষ এক তারার রহস্যময় উজ্জ্বলতার কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশাল আকারের ওরিয়ন তারামণ্ডলে রয়েছে ‘এফইউ ওরিওনিস’ নামের এক অনন্য তারা, যা ১৯৩৬ সাল থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করে রেখেছিল।
এই তরুণ তারামণ্ডল হঠাৎ করে হাজারগুণ বেশি উজ্জ্বল হয়ে যায়, যা বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে। এমন ঘটনা সাধারণত মৃত তারার বেলায় ঘটে, ‘এফইউ ওরিওনিস’-এর মতো তরুণ তারার বেলায় নয়।
এ অস্বাভাবিক আচরণ থেকেই তারার নতুন এক শ্রেণী পাওয়া গেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘এফইউওর’। এর মূল বৈশিষ্ট্য হল, এর উজ্জ্বলতা হঠাৎ করে বেড়ে যায় ও পরবর্তীতে কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে তা ম্লান হয়ে যায়।
এ তরুণ তারারা কেন ও কীভাবে এ ধরনের নাটকীয় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়, জ্যোতির্বিজ্ঞানের পক্ষে সেটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ এক চ্যালেঞ্জ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ।
সম্প্রতি ‘অ্যাটাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে (আলমা)’ নামের রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন, যা এই তারার রহস্যের উপর আলোকপাত করে।
উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত ‘আলমা রিজিওনাল সেন্টার’-এর উপ ব্যবস্থাপক আন্তোনিও হেলসের নেতৃত্বাধীন এক গবেষণা দল প্রথমবারের মতো তারার এই অসাধারণ বিস্ফোরণে জ্বালানীর যোগান দেওয়া উপাদানের প্রত্যক্ষ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে।
প্রায় এক শতাব্দী ধরে উজ্জ্বল বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজের আশপাশের বিভিন্ন উপাদান সক্রিয়ভাবে গিলে খাচ্ছে এফইউ ওরিওনিস।
আলমা’র সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, এফইউ ওরিওনিস-এ কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের একটি পাতলা প্রবাহ রয়েছে।
তবে এ প্রবাহ তারার মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটানোর মতো যথেষ্ট নয়। প্রচলিত ধারণা হল, এটি এমন বিশাল এক গ্যাস প্রবাহের অবশিষ্টাংশ, যা আগের তরুণ তারার সিস্টেমকে খাবারের যোগান দিত।
হেলস বলেন, সম্ভবত সিস্টেমটি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে এর চেয়ে বড় কোনও গ্যাস প্রবাহের সঙ্গে আগের গ্যাসের মিথস্ক্রিয়ার কারণে, যা এর উজ্জ্বলতাকে বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ বিস্ফোরণ ঘটে ও ‘এফইউ ওরিয়নিস’-এর মতো তরুণ তারা কীভাবে নিজের ভর আবার পূরণ করে সেই প্রক্রিয়াকে আরও রহস্যময় করে তুলেছে নতুন এ অনুসন্ধান।
এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এ।