“২২/২৩ তারিখের দিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরির সম্ভাবনা আছে”, বলেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।
Published : 18 May 2024, 12:08 AM
একদিনের ব্যবধানে দেশে কমে এসেছে তাপপ্রবাহের বিস্তার, সেই সঙ্গে সামনের সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃহস্পতিবার যেখানে সারাদেশেই মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল, সেখানে শুক্রবার দাবদাহ বইছে ৫৩ জেলায়।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২২/২৩ তারিখের দিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরির সম্ভাবনা আছে। উপকূলে আঘাত হানবে কিনা বা কতটুকু হবে এখনো বলা যাচ্ছে না, তৈরি হওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বুলেটিনে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ উঠেছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এর বাইরে রাজশাহী, নওগাঁর বদলগাছী, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও বগুড়ায় কম বেশি বৃষ্টি হয়।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের পূর্বাঞ্চলের দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে; দেশের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর গরম অনুভূত হতে পারে।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
চলতি মৌসুমে ৩১ মার্চ থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়, যা ৬ মে পর্যন্ত টানা ৩৭ দিন ধরে চলে। এরপর গত সপ্তাহে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতায় কিছুটা স্বস্তি ফেরে।
নতুন করে তাপপ্রবাহ শুরু হয় গত সোমবার থেকে। সেদিন সাত জেলায় দাবদাহ ছিল; পরে তা ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে দুই দিনের সতর্কবার্তার পর আবারও নতুন করে দুইদিনের সতর্কবার্তা জারি করে আবহাওয়া অফিস।
এর আগে টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে পারদ চড়তে থাকলে এপ্রিলের শেষ দিকে ও মে মাসের শুরুতে কয়েকদফা সতকর্তা জারি করা হয়েছিল।
শুক্রবার আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়, ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ রংপুর রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে উঠার আশঙ্কা নেই বলেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “২০ মের কাছাকাছি সময়ে সারাদেশে ভালো বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, সর্বোচ্চ ৩/৪ দিন স্থায়ী হতে পারে সেই বৃষ্টি। এর আগে যা হবে তা ততটা প্রভাব ফেলবে না। বৃষ্টির পর আবার তাপপ্রবাহ আসতে পারে।”
মে মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের কোথাও কোথাও এক থেকে তিনটি মৃদু অথবা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং এক থেকে দুটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
টানা দাবদাহের মধ্যে ৩০ এপ্রিল যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে। সেটাই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি লঘুচাপ হতে পারে, যার মধ্যে একটি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে নিম্নচাপ অথবা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা আছে।
চলতি মাসে নদ-নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ থাকতে পারে। তবে উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
তাপপ্রবাহ: আরো দুই দিনের 'সতর্কবার্তা'
দাবদাহ বইছে সারাদেশে, কমতে পারে সোমবারের দিকে
৫৮ জেলায় তাপপ্রবাহ, শনিবার পর্যন্ত বিস্তারের আভাস