সৌর প্যানেলের সর্বশেষ এ রেকর্ডটি এমন একটি উপায়, যেখানে পেরভস্কাইট বা একটি ক্যালসিয়াম টাইটানিয়াম অক্সাইড খনিজের ব্যবহার ছাড়াও সৌর কোষ তৈরি করা যায়।
Published : 10 May 2024, 02:36 PM
সম্প্রতি সৌর প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতায় বিশ্ব রেকর্ড ভাঙার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগের রেকর্ডটি টিকে ছিল ছয় মাসেরও কম।
সৌর প্যানেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সরবরাহক চীনা কোম্পানি ‘লংগি গ্রিন এনার্জি টেকনোলজি’র একদল গবেষক ২৭.৩ শতাংশ দক্ষতার স্তরের সৌর প্যানেল তৈরি করার মাধ্যমে নভেম্বরে তৈরি করা ২১.১ শতাংশ দক্ষতার সৌর প্যানেল তৈরির আগের রেকর্ডটি ভেঙেছেন।
এই সর্বশেষ রেকর্ডটি হয়েছিল পরীক্ষাগারে একটি ক্রিস্টাল সোলার সেল ব্যবহার করে। তবে, কোম্পানিটি ২৪.৪৩ শতাংশ পরিবর্তনশীল সক্ষমতার হারসহ বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যাবে এমন একটি নতুন কোষও উন্মোচন করেছে বলে প্রবিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
পাশাপাশি এই নতুন প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী ‘ক্লিন এনার্জি’র দিকে রূপান্তরের জন্য বড় উৎসাহ হিসাবে কাজ করবে বলে দাবি কোম্পানিটির।
“এছাড়াও এই সৌর প্যানেলটি সারা জীবনব্যাপী এই কর্মক্ষমতা ধরে রাখবে। কারণ, এই সৌর প্যানেলের মডিউলটিকে নির্ভরযোগ্যতার সর্বোচ্চ মানের উপযোগী করে নকশা করা হয়েছে,” বলেছেন ‘লংগি গ্রিন এনার্জি টেকনোলজি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেনিস শে৷।
“বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকরা এ বিষয়ে আশ্বস্ত হতে পারেন যে, ‘HiMO 9’ মডিউল থেকে তৈরি একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র তাদের জমির সবচেয়ে কাযকর ব্যবহার করতে ও সূর্যের আলো থেকে সর্বাধিক মূল্য পেতে সাহায্য করবে।”
সৌর প্যানেলের সর্বশেষ এ রেকর্ডটি আরও একটি সম্ভবনা দেখাচ্ছে। এতে পেরভস্কাইট বা ক্যালসিয়াম টাইটানিয়াম অক্সাইড খনিজের ব্যবহার ছাড়াও পরবর্তী প্রজন্মের সৌর কোষ তৈরি করা যাবে। পরীক্ষাগারে এ পদ্ধতিতে এ সৌর প্যানেল ৩৩ শতাংশের বেশি দক্ষতার হার অর্জন করতে পেরেছে। একে গোটা বিশ্বে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য একটি এটি ভাল ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন উদ্যোক্তারা।
এ নতুন রেকর্ডটিতে সমর্থন মিলেছে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বে ব্যবহৃত মোট বিদ্যুতের ৩০ শতাংশেরও বেশি এসেছে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে।
ক্লাইমেট থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘এমবার’-এ প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইলেকট্রিসিটি রিভিউ’ অনুসারে, ‘ক্লিন এনার্জি’র ব্যবহার বৃদ্ধি মূলত সৌর প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে চালিত হয়।
“নবায়নযোগ্য প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ এসে গেছে,” বলেছেন ‘এমবার’-এর ‘গ্লোবাল ইনসাইট ডিরেক্টর’ ডেভ জোন্স।
“বিশেষ করে, যে কারো ভাবনার চেয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সৌরশক্তি।”
বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে বার্ষিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশেরও বেশি আসছে সৌরশক্তি থেকে, যেখানে ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে সৌরবিদ্যুতের অংশ চার দশমিক ছয় শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে সাড়ে পাঁচ শতাংশ হয়েছে৷
প্রতিবেদনে এমবার লিখেছে, “বায়ুর সঙ্গে মিলে সৌরশক্তি, ভবিষ্যতের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড তৈরি করবে, যা ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ব্যবহৃত বিদ্যুতের প্রায় ৭০ শতাংশ হবে।”