কর্মস্থলে সশরীরে না ফিরলে টেসলা কর্মীদের ছাটাই করার কথা বলেছিলেন ইলন মাস্ক। হিতে বিপরীত হয়েছে মাস্কের ওই হুমকিতে। কর্মীরা ফিরেছেন ঠিকই, এখন তাদের কাজের জায়গা দিতে পারছে না টেসলা।
Published : 28 Jun 2022, 03:33 PM
লকডাউন চলাকালে যে কর্মীরা বাসায় বসে কাজ করছিলেন, তাদের সশরীরে অফিসে ফেরার নির্দেশ দিয়ে মাস্ক বলেছিলেন, অফিসে হাজির না থাকলে ধরে নেওয়া হবে যে তারা ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু প্রযুক্তিখাতের সংবাদের ওয়েবসাইট দ্য ইনফর্মেশন-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ফিরতি কর্মীদের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিল না টেসলা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেমন্টে অবস্থিত টেসলার ক্যাম্পানে ফিরে নিজের গাড়ি রাখারই জায়গা পাচ্ছিলেন না টেসলা কর্মীরা। এতো গেল কেবল অফিসের বাইরের পরিস্থিতি, ভেতরেও কাজে বসার জন্য ডেস্ক খালি পাচ্ছিলেন না তারা। এমনকি দুর্বল ওয়াই-ফাই সংযোগও ফিরতি কর্মীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়েবসাইটটি।
২০১৯ সালের পর থেকে টেসলার কর্মী সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ৯৯ হাজার ২১০ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে দ্য ইনফর্মেশন। কিন্তু এ মাসের শুরুতেই বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে নিজের ‘বাজে অনুভূতি হচ্ছে’ বলে প্রতিষ্ঠানে নতুন কর্মী নিয়োগ স্থগিত করেছেন মাস্ক; উপরন্তু ১০ শতাংশ কর্মী ছাটাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বেতনভুক্ত এবং ঘণ্টা হিসেবে মজুরী পাওয়া কর্মী, উভয়ের ক্ষেত্রেই মাস্কের কর্মী ছাটাইয়ের সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। টেসলার কর্মীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বেতনভুক্ত বলে জানিয়েছে সাইটটি; তবে এদের মধ্যে কতোজন দাপ্তরিক কাজ করেন আর কতোজন টেসলার নির্মাণ কারখানায় কাজ করেন তা স্পষ্ট নয়।
তবে, ফ্রেমন্টে টেসলার অফিস ও নির্মাণ কারখানা দুটোই আছে এবং মহাকারীর প্রকোপে সিংহভাগ কর্মী নিজের বাসা থেকেই কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছে ভার্জ।
টেসলার বর্তমান কর্মীদের একজন দ্য ইনফর্মেশনকে জানিয়েছেন, নিজের গাড়ি নিয়ে যারা কাজে গিয়েছিলেন, তারা গাড়ির পার্কিং খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অনেকেই কাছের এক রেল স্টেশনে নিজের গাড়ি রেখে শাটল ট্রেনে করে ক্যাম্পাসে পৌঁছেছেন।
আর অফিসের ভেতরে অনেকেই বসার জায়গাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না বলে উঠে এসেছে দ্য ইনফর্মেশনের প্রতিবেদনে। লকডাউন চলাকালীন অফিসের ভেতরের অনেক জায়গাই ভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছে টেসলা; আর, মহামারীর দুই বছরে নিয়োগ পাওয়া নতুন কর্মীদের কথাও সম্ভবত ভেবে দেখেননি মাস্ক।
অফিসে ডেস্ক সঙ্কট এতোটাই প্রকোপ ছিল যে, ম্যানেজার পর্যায়ের কর্মকর্তারা নাকি নিজের কর্মীদের বাসা থেকেই কাজ করতে বলে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন। আর যারা কাজ করার জন্য বসার জায়গা পেয়েছেন, তাদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল দুর্বল ওয়াই-ফাই সংযোগ।
এই পরিস্থিতি নিয়ে ভার্জ মন্তব্য করেছে, কর্মীদের অফিসের ফেরাতে নিজের পরিকল্পনা নিজেই আংশিকভাবে নষ্ট করেছেন কোম্পানির ‘টেকনোকিং’ ইলন মাস্ক।