অ্যামাজনের শুরুর দিনগুলোতে সমালোচকদের খুব একটা পাত্তা দেননি জেফ বেজোস। কিন্তু দুই দশকেরও পর অতীত সমালোচনাকে অবলীলায় প্রকাশ্যে এনেছেন অ্যামাজনের এ প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি এরকমই এক ঘটনা ঘটেছে টুইটারে।
Published : 13 Oct 2021, 04:37 PM
ব্যবসায়িক প্রকাশনা ‘ব্যারন’স’-এ প্রকাশিত এক প্রচ্ছদের ছবি মাইক্রোব্লগিং সাইটটিতে শেয়ার করেছেন বেজোস। ২২ বছর আগের ওই প্রচ্ছদে লেখা, অ্যামাজন নিয়ে জেফ বেজোস যা ভেবেছেন তা “অর্থহীন”, তিনি আরেকজন “মধ্যস্বত্ত্বভোগী” মাত্র।
ব্যারন’স তাদের ওই নিবন্ধটির শিরোনাম দিয়েছিল “অ্যামাজন ডট বম্ব”। প্রচ্ছদে আঁকা হয়েছিল কার্টুন, সেখানে ফেঁটে যাবে এমন এক বোমার উপর দেখা যাচ্ছিল বেজোসের চেহারা। নিবন্ধে দাবি করা হয়েছিল, সরাসরি ভোক্তাকে সেবা দেওয়া ডেল ও সনির মতো প্রতিষ্ঠানের সামনে প্রতিযোগিতায় টিকবে না অ্যামাজন।
নিবন্ধে আরও দাবি ছিল, প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের টালমাটাল অবস্থা বড় একটি প্রমাণ যে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রির পটভূমি পরিবর্তনে কখনই কিছু করতে পারবে না অ্যামাজন।
টুইটারে বেজোস প্রচ্ছদটির ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “শুনুন এবং খোলা মনে থাকুন, কিন্তু আপনি কে – সেটি অন্য কাউকে ঠিক করে ফেলতে দেবেন না। এটা ওই ধরনের অন্যতম এক গল্প যেগুলো পুরোটা পথ জুড়ে আমাদের বলে চলেছে যে আমরা ব্যর্থ হবো। আজ অ্যামাজন বিশ্বের অন্যতম সফল প্রতিষ্ঠান এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি শিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে।”
Listen and be open, but don’t let anybody tell you who you are. This was just one of the many stories telling us all the ways we were going to fail. Today, Amazon is one of the world’s most successful companies and has revolutionized two entirely different industries. pic.twitter.com/MgMsQHwqZl
— Jeff Bezos (@JeffBezos) October 11, 2021
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি উল্লেখ করেছে, ব্যারন’স যে সময় নিবন্ধটি প্রকাশ করে তখন অ্যামাজনের স্টক মূল্যের নাটকীয়ভাবে দরপতন হচ্ছে। ১৯৯৯ সালের মে মাসের শেষের দিকে অ্যামাজনের শেয়ার মূল্য ৬০ ডলারের নিচে চলে এসেছিল। অথচ তার এক মাস আগেই প্রতি শেয়ারের মূল্য ছিল একশ’ পাঁচ ডলার। এরপর ২০০০ সালের ‘ডটকম বাবল’ -এর শেষে আরও একবার বড় ধাক্কার মুখে পড়েছিল বেজোস নেতৃত্বাধীন অ্যামাজন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে গেছে অ্যামাজন। দুই দশকে পাড়ি দিয়েছে অনেকটা পথ। নিজ সাম্রাজ্যের পরিসর বাড়িয়েছে অনেকটাই। যে কারণে এখন বেজোস তুষ্টি নিয়ে অ্যামাজনের অতীত ভবিষ্যদ্বাণীর দিকে তাকাতে পারেন।
এদিকে, সোমবার নতুন নিবন্ধ প্রকাশ করে বেজোসের ওই টুইটের উত্তর দিয়েছে ব্যারন’স। প্রকাশনাটি জানিয়েছে, সে সময় অ্যামাজনের শেয়ার মূল্যের আদতেও দরপতন হয়েছিল, এবং ক্রমাগত দর কমেছিল।
ব্যারন’স জানিয়েছে, ২০০১ সালে অ্যামাজনের স্টক মূল্য শেয়ার প্রতি ১০ ডলারের নিচে নেমে এসেছিল, হিসেবে আগের তুলনায় ৯০ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছিল শেয়ার মূল্য।
তবে, “বেজোসের নেতৃত্বের অধীনে” অ্যামাজন যে ই-কমার্স ও ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে পথিকৃৎ এর ভূমিকা পালন করেছে, তা নতুন নিবন্ধে উল্লেখ করতে ভুলেনি ব্যারন’স।
১.৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমান নিয়ে বেজোসের অ্যামাজন এখন বিশ্বের ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের একটি যা ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানের মাইলফলক পার করতে পেরেছে।
অ্যামাজনের পাশাপাশি গড়ে উঠেছেন বেজোসও। ব্লুমবার্গের তথ্য অনুসারে, অ্যামাজনের সফলতা বেজোসকে ১৮ হাজার নয়শ’ কোটি ডলার নেট সম্পদের মালিক বানিয়েছে। হিসেবে এখন তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী। প্রথম স্থানে রয়েছেন আরেক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। বর্তমানে মাস্কের নেট সম্পদ ২২ হাজার চারশ’ কোটি ডলার।