‘কোভিড-১৯ অ্যাক্ট অনলাইন হ্যাকাথন’ প্রতিযোগিতায় ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন’ বিভাগে জয়ী হয়েছে নিরাপদ অ্যাপ।
Published : 18 Jun 2020, 10:02 PM
কোয়ারেন্টিনে নজর রাখতে চট্টগ্রাম পুলিশের অ্যাপ চালু
মহামারী মোকাবেলায় দেশের তরুণ বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের অংশগ্রহণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এবং কল ফর নেশন প্লাটফর্মের আওতায় গত ৮ জুন ছিল এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব।
অ্যাপটিতে কোয়ারেন্টিন মনিটরিং, প্লাজমা ডোনেশন ডেটাবেইজ, কনট্যাক্ট ট্রেসিং ও অ্যালার্ট, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার মডিউল, পাবলিক রিলিফ ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজমেন্ট এবং আরও কয়েকটি ফিচার রয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন ইনোভেস টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ খান।
নিরাপদ এই ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানেরই বানানো অ্যাপ।
এটুআইয়ের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পাতায় প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণায় বলা হয়, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বিভাগে বিজয়ী হয়েছে ইনোভেস টেকনোলজিসের ‘নিরাপদ: স্টে হোম, স্টে সেফ, হেল্প বাংলাদেশ পুলিশ অর এনি কনসার্নড অথরিটি টু মনিটর অল দ্য পিপল হু আর ইন হোম কোয়ারেন্টিন’ নামের প্রকল্প।
প্রতিযোগিতায় এই প্রকল্পের টিম লিডার ছিলেন ইনোভেস টেকনোলজিসের প্রধান নির্বাহী মুনিরুল আলম।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ খান বলেন, “অ্যাপের কোয়ারেন্টিন মনিটরিং ফিচারটি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
“বিদেশ থেকে আসাদের হোম কোয়ারেন্টিন তদারকিতে এই অ্যাপ চালু করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ।”
পরে চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর জেলা পুলিশও ‘নিরাপদ’ নামের এই কোয়ারেন্টিন অ্যাপ নিয়ে মাঠে নামে।
“হোম কোয়ারেন্টিন অ্যাপটি ফিচারটি গ্রামীণ ফোনের নেটওয়ার্কে কোনো রকম ইন্টারনেট চার্জ ছাড়াই ব্যবহার করা যাচ্ছে”, বলেন মিনহাজ।
তিনি বলেন, “অ্যাপের অন্যসব ফিচারও বাস্তবায়নের জন্য পুরো প্রস্তুত। আমাদের রিলিফ ম্যানেজমেন্ট ফিচারটি শুধু এই সময়েই নয়, দেশের যে কোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা সম্ভব।”
নিরাপদ অ্যাপের পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় মিনহাজ বলেন, “আমরা আশা করি বিভিন্ন ফিচার নিয়ে তৈরি এই অ্যাপটি সরকার কাজে লাগাবে। আমরা অ্যাপটি তাদের দিতে চাই। এর পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা আমরা দেব।”
গত ৩০ মার্চ শুরু হওয়া কোভিড-১৯ অ্যাক্ট অনলাইন হ্যাকাথন প্রতিযোগিতায় তরুণদের ৬৮১টি প্রকল্প জমা পড়ে বলে ফেইসবুক পোস্টে জানিয়েছে এটুআই।
১৮ জনের জুরি প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে ৬টি বিভাগে ৬টি প্রকল্পকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এই ৬টি বিভাগে ২টি করে রানার্সআপ পুরস্কারও দেওয়া হয়।
এছাড়া ২টি বিশেষ বিভাগে ২টি পুরস্কার ও ১৬টি অনারেবল মেনশনসহ প্রতিযোগিতায় মোট ৩৬টি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
প্রতিযোগিতায় অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বিভাগে প্রথম রানার আপ হয় টগুমগু প্রাইভেট লিমিটেডের ‘ওয়ান স্টপ প্যারেন্টিং অ্যাপ বাই টগুমগু’ প্রকল্পটি।
‘কোভিড-১৯ ডেটা অ্যানালিসিস টু ডিটারমাইন ক্রিটিকাল হেলথ, হাইজিন অ্যান্ড ইনফরমেশন অ্যাকসেস ফ্যাক্টর টু অ্যাসেস রিস্ক অ্যান্ড ডেভেলপ মিটিগেশন অ্যান্ড প্রিভেনশন স্ট্রাটেজি ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প নিয়ে একই বিভাগে দ্বিতীয় রানার আপ হয় পিফিজার।
হ্যাকাথনের অন্যান্য বিভাগের মধ্যে ছিল - সোশিও ইকোনোমিকালি ডিজঅ্যাডভানটেজ পিপল, বিজনেস অপারেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন, হেলথ কেয়ার ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট ও মেন্টাল হেলথ।
এছাড়া ‘কানেক্টিং দ্যা আনকানেকটেড স্লাম ডুয়েলারর্স ’ ও ‘প্ৰান্ন: কোভিড+ পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট টুল’ প্রকল্প দুটিকে বিশেষ বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়।
|
| প্রকল্প |
|
বিভাগ | বিজয়ী | প্রথম রানার আপ | দ্বিতীয় রানার আপ |
সোশিও ইকোনোমিকালি ডিজঅ্যাডভানটেজ পিপল | সুযোগ-এ ভার্চুয়াল অপারেশনাল নেটওয়ার্ক টু সাপোর্ট দ্য বিওপি পপুলেশন | মানুষ.এআই | আইওটি অ্যানাবলড অটো সলিউশন ফর ওএমএস ডিসট্রিবিউশন |
বিজনেস অপারেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন | ল্যান্ডনক: লাস্ট মাইল গ্রোসারি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ফর দ্য পিপল হু কান্ট ইনভেস্ট লার্জলি অন টেক | নিউ থ্রেড | নেক্সট জেনারেশন স্মল বিজনেস প্লাটফর্ম |
হেলথ কেয়ার ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট | পাওয়ারড এয়ার পিউরিফায়িং রেস্পিরেটর (পিএপিআর) | র্যাডঅ্যাসিস্ট: দ্যা ফাস্ট এআই বেইজড টেলিরেডিওলজি সলিউশন ডেভলপড ইন বাংলাদেশ | সেন্ট্রাল আইসিইউ ম্যনেজমেন্ট অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেম |
মেন্টাল হেলথ | মনের বন্ধু | নির্ভানা: মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েল বিয়িং সাপোর্টস | মনোসেবা: অ্যান অনলাইন সাইকলজিক্যাল সলিউশন |
অন্যান্য | লং ডিসটেন্স ডিজইনফেকশান প্রসিডিউর/সার্ভিস ফর লকড ডাউন এরিয়াস | আলট্রাভায়োলেট জার্মিসাইডাল ইরাডিয়েশান বেইজড ডিজইনফেকশন বক্স | মানবতার ঘর |
অনলাইনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এতে সভাপতি ছিলেন সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “এই সকল সলিউশনগুলোর সুবিধা যাতে দেশের মানুষ গ্রহণ করতে পারেন, সে কারণে এইগুলোকে স্টার্টআপে পরিণত করা হবে। এজন্য স্টার্টআপ ফান্ড ও মেন্টরিংসহ সরকারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।”
এই প্রতিযোগিতায় সহযোগী পার্টনার ছিল আইডিয়া, স্টার্টআপ বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ডসামিট অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান।