যুক্তরাজ্যে ক্যান্সার রোগের ক্ষেত্রে, ফুসফুস ক্যান্সার তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও দেশটিতে ক্যান্সার থেকে মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ এটিই।
Published : 09 Jul 2024, 06:05 PM
ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যান্সার স্বাভাবিক বিষয় হলেও অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটার কারণ কী? এর জবাব মিলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।
ইউসিএল-এর ‘ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট’ ও ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন, কেন ‘নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সার (এনএসসিএলসি)’-এর মতো রোগের চিকিৎসা কখনও কখনও ব্যর্থ হয়, বিশেষ করে যারা কখনোই ধূমপান করেননি তাদের বেলায়।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ। এতে দেখা গেছে, বিশেষ ধরনের ‘জেনেটিক মিউটেশন’ওয়ালা ফুসফুস ক্যান্সার কোষের ক্ষেত্রে এর জিনোম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি। ফলে, এর চিকিৎসা করলেও তা কাজে লাগে না।
যুক্তরাজ্যে ক্যান্সার রোগের ক্ষেত্রে, ফুসফুস ক্যান্সার তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও দেশটিতে ক্যান্সার থেকে মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ এটিই।
এর মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ ফুসফুস ক্যান্সার রোগীদের ‘এনএসসিএলসি’ থাকে, যা অধুমপায়ীদের বেলায় সবচেয়ে সাধারণ। তবে, ক্যান্সার থেকে মৃত্যুর সাধারণ কারণ হিসেবে ফুসফুস ক্যান্সারের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম।
এনএসসিএলসি’র ক্ষেত্রে, সবচেয়ে ঘন ঘন জেনেটিক মিউটেশন হওয়ার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে ‘এপিডার্মাল গ্রোথ ফ্যাক্টর রিসেপ্টর জিন (ইজিএফআর)’-এর, যা যুক্তরাজ্যে এনএসসিএলসি’তে আক্রান্ত ১০-১৫ শতাংশ রোগীর মধ্যে পাওয়া যায়, বিশেষ করে অধূমপায়ীদের মধ্যে। আর ক্যান্সার কোষ দ্রুত বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এই ‘ইজিএফআর মিউটেশন’ প্রক্রিয়া সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
‘ইজিএফআর’কে লক্ষ্য করে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি, যেগুলো ‘ইজিএফআর ইনহিবিটর্স’ নামেও পরিচিত, তা চালু হয়েছিল ১৫ বছরের বেশি সময় আগে। তবে, ক্ষেত্রবিশেষে এদের কার্যকারিতা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
এক্ষেত্রে কিছু কিছু রোগী নিজেদের টিউমারের আকার ছোট হতে দেখলেও অন্যরা, বিশেষ করে ‘পি ৫৩’ নামের জিনওয়ালা রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তেমন ভালো হয় না, যেখানে বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও কম থাকে। আর এখন পর্যন্ত, এ ভিন্নতার কারণগুলো অস্পষ্ট ছিল।
এর কারণ বের করতে গবেষকরা সবচেয়ে সাম্প্রতিক ইজিএফআর ইনহিবিটার ‘ওসিমার্টিনিব’-এর ডেটা পুনরায় বিশ্লেষণ করেছেন, যেখানে স্রেফ ‘ইজিএফআর মিউটেশন’ থাকা রোগী এমনকি ইজিএফআর ও পি ৫৩ উভয় মিউটেশন থাকা রোগীদের তথ্যও পরীক্ষা করে দেখেছিলেন তারা।
‘ইউসিএল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট’-এর ‘ক্লিনিকাল অনকোলজিস্ট’ পরামর্শক ড. ক্রিস্পিন হিলি বলেছেন, এক্ষেত্রে মিউটেশন ও জিনোম উভয়ই দ্বিগুণ হওয়া রোগীদের শনাক্ত করতে পারলে তা এর চেয়েও ‘পারসোনালাইজড’ চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরির সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।