অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ম্যাককুয়ারি’র বিশ্লেষক ফ্রেড হেভমেয়ার বলেন, প্রস্তাবনায় “আগে নিষেধাজ্ঞা পরে জিজ্ঞাসাবাদ” এমন নীতির বদলে একটি “কৌশলী” উপায় অবলম্বন করেছে ইইউ।
Published : 29 Apr 2023, 05:54 PM
চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই টুল নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলো নিজেদের পণ্য তৈরির সময় কোনো কপিরাইটভুক্ত উপাদান ব্যবহার করলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে সেগুলোর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
এর আগে স্বাক্ষরিত এক সমঝোতা স্মারক থেকে এআই নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক ‘পূর্নাঙ্গ আইন’ তৈরির পথে হাটছে ইউরোপের শীর্ষ সংস্থাটি।
উদীয়মান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে দুই বছর আগে ‘এআই অ্যাক্ট’ নামে এক খসড়া নীতিমালা তৈরির কাজ শুরু করে ইউরোপীয় কমিশন।
গত বছরের শেষ নাগাদ মাইক্রোসফট মালিকানাধীন ওপেনআই’র তৈরি চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার অল্প সময়ের মধ্যেই এটি নানা মহলে তুমুল আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেয়। সে সময় থেকেই নীতিমালা তৈরির বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
এই খসড়া আইনটি পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে একমত হয়েছেন ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যরা। ইইউ’র আইনপ্রণেতা ও সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণে এক ত্রিপাক্ষীয় আলোচনায় এই বিলের চূড়ান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
এআই প্রযুক্তিগুলোকে নিরাপত্তার মাপকাঠিতে, নিরাপদ থেকে অতি ভয়ংকর পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করার প্রস্তাবনা রয়েছে আইনটির খসড়ায়। এ ছাড়া, বায়োমেট্রিক নজরদারি, গুজব রটানো ও বৈষম্যমূলক ভাষার মতো বিষয়গুলো নিয়ে সম্ভাব্য ঝুঁকিও আছে।
উচ্চমাত্রা ঝুঁকি থাকা বিভিন্ন এআই টুল নিষিদ্ধ না হলেও, যারা এটি ব্যবহার করছেন তাদের কার্যক্রম পরিচালনার বেলায় ব্যপক স্বচ্ছতা রাখতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
চ্যাটজিপিটি ও মিডজার্নির মত জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি তৈরিতে অন্যান্য কপিরাইট উপাদান ব্যবহৃত হলে সেগুলোর তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
গত সপ্তাহে আইনটির সর্বশেষ এই ধারা প্রস্তাবিত খসড়ায় সংযোজনের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র।
“কিছু রক্ষণশীল, কিছু অতি-বাম চাচ্ছে, এআই’র ওপর তুমুল বিধিনিষেধ আরোপ করে এতে যেন কঠোর নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। তবে, পার্লামেন্ট উদ্ভাবনবান্ধব পরিবেশ, নাগরিক অধিকার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য উপায় বের করেছে।” --বলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উপপ্রধান স্ভেঞ্জা হান।
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানি ‘ম্যাককুয়েরি’র বিশ্লেষক ফ্রেড হ্যাভমেয়ার বলেন, প্রস্তাবনায় “আগে নিষেধাজ্ঞা পরে জিজ্ঞাসাবাদ” এমন নীতির বদলে একটি “কৌশলী” উপায় অবলম্বন করেছে ইইউ।
“এআই নীতিমালা তৈরিতে ইইউ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।” -- রয়টার্সকে বলেন তিনি।
বাজারে প্রতিযোগিতার রেশ
গত বছরের শেষ নাগাদ বাজারে এসেই তুমুল সাড়া ফেলেছে মাইক্রোসফট সমর্থিত সফটওয়্যার কোম্পানি ওপেনএআই’র তৈরি চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি। আর উন্মোচনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ১০ কোটি ব্যবহারকারীর মাইলফলক স্পর্শ করে এটি ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল গ্রাহক অ্যাপ্লিকেশন হয়ে উঠেছে।
বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে ছয় মাসের জন্য জেনারেটিভ এআই নির্ভর পণ্যের বিকাশ স্থগিত রাখার জন্য এক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেন টুইটারের মালিক ইলন মাস্ক’সহ প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ ব্যক্তিরা।
মাস্ক এই চিঠিতে স্বাক্ষরের পরপরই ব্রিটিশ সংবাদপত্র ফাইনানশিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে আসে ওপেনএআই’র সঙ্গে পাল্লা দিতে তিনি আরেকটি নতুন স্টার্টআপ খুলতে যাচ্ছেন।