কোম্পানির প্রতিদ্বন্দ্বীরা সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের নতুন উপায় খুঁজে পাওয়ার লক্ষণ দেখালেও বাস্তবতা হচ্ছে, তারা কেউ ‘টুইটারের মতো’ অভিজ্ঞতার দিচ্ছে না।
Published : 07 Apr 2023, 11:43 AM
ইলন মাস্কের অধীনে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টুইটারের বিপজ্জনক পতন দেখলেও তা এখনও মার্কিন সংবাদকর্মীদের জন্য যেন ‘ভার্চুয়াল আড্ডাস্থল’ হয়েই আছে।
২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় আর্থিক লেনদেন নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের কেবলভিত্তিক ও জাতীয় গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত হলেও ওই ঘটনা সবার আগে এসেছে ওই হোঁচট খাওয়া প্ল্যাটফর্মেই - টুইটারে।
২০২৩ সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সম্ভবত টুইটারের সঙ্গে সম্পর্কছিন্ন করবে – ভার্জ এমন ধারণার প্রচার করেছিল ডিসেম্বরে। এপ্রিলে এসে সেই হিসাব মেলাতে বসেছে প্রযুক্তি সাইটটি।
ডিসেম্বরের ওই ভবিষ্যদ্বাণীর পক্ষে তখন যুক্তিও ছিল। “প্ল্যাটফর্মে হঠাৎকরেই ডানপন্থী এজেন্ডা ও ব্যক্তিদের উত্থান তুলনামূলক বেশি হাই-প্রোফাইল ব্যবহারকারীকে সামাজিক প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে ঠেলে দেবে, যারা তার হাস্যকর কার্যক্রম ও কনটেন্ট মডারেশনের বাতিকভিত্তিক পদ্ধতি নিয়ে ক্রমাগত বিরক্ত হচ্ছেন।” -- সে সময় বলেছিল প্রকাশনাটি।
“আকারে ছোট ও ব্যবহারে সহজ হওয়ায় মাস্টডনের মতো বিভিন্ন বিকল্প প্ল্যাটফর্ম তুলনামূলক বেশি লোকজন, বিশেষ করে সেইসব সংবাদকর্মী, যারা টুইটার থেকে বের হতে চান, তাদের জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।”
“২০২০ সালের শেষ নাগাদ, টুইটার আর মার্কিন প্রেসের ডিফল্ট হিসেবে থাকা দৈনিক সংবাদের নীতিমালা অনুসরণ করবে না।” - সবশেষে ছিল এমন অনুমান।
প্রায় চার মাস পরে, ভার্জের ওই প্রতিবেদনের ভবিষ্যদ্বাণী নিজেই যেন টালমাটাল অবস্থায়। অনুমানের প্রথম অংশ মোটামুটি সত্য প্রমাণিত হয়েছে, মাস্কের কার্যক্রমে সংবাদকর্মীরা বিরক্ত ও তারা তাকে ডোবাতে চান। তবে, মাস্কের বেশ কয়েকজন কর্মীর পাশাপাশি ওই একই সংবাদকর্মীরাই, যারা প্ল্যাটফর্ম থেকে নির্বিচারে স্থগিত, বহিস্কৃত, বা ছাঁটাই হয়েছেন, তারা প্রচলিত উপায়েই নিজস্ব কার্যক্রম, খেলাধূলার টুইট ও খাবারের ছবি শেয়ার করে প্ল্যাটফর্মটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
কোম্পানির প্রতিদ্বন্দ্বীরা সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের নতুন উপায় খুঁজে পাওয়ার লক্ষণ দেখালেও বাস্তবতা হচ্ছে, তারা কেউ ‘টুইটারের মতো’ অভিজ্ঞতার দিচ্ছে না।
কিছু ক্ষেত্রে টুইটারের ব্যবহার আগের তুলনায় কমেছে। তবে ভার্জের প্রতিবেদন বলছে, শীর্ষ প্রায় হাজারখানেক প্রযুক্তি ও গণমাধ্যম পেশাজীবির অ্যাকাউন্টে দেখা যাচ্ছে এর জনপ্রিয়তা একইরকম আছে।
এর টাইমলাইন হয়তো আগের তুলনায় কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। তবে, সকলেই দৈনিক নিজেদের রিটুইট চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু এমনটি ঘটছে কেন?
এর সবচেয়ে স্পষ্ট কারণ সম্ভবত জড়তা। টুইটারে নিজেদের পরিচিতি ও অবস্থান তৈরিতে এক দশকের বেশি সময় খরচ করেছেন সংবাদকর্মীরা। আর তারা রাতারাতি সম্মিলিতভাবে কখনওই সাইটটি বর্জন করবেন না। যতক্ষণ তারা নিজেদের স্টোরিজ-এ ট্রাফিক টানতে পারবেন, জনসম্মুখে বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের স্টোরি নিয়ে আলোচনা করতে ও নিজেদের দর্শক সংখ্যা বাড়াতে পারবেন, ততক্ষণ তাদের প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার কারণ নেই বললেই চলে।