ফেডারেশন কাপে শেষ সময়ের গোলে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের স্বপ্ন ভেঙে সেমি-ফাইনালে উঠেছে মোহামেডান।
Published : 02 Apr 2024, 05:33 PM
ম্যাচ শুরু হতেই, ২৬ সেকেন্ডের মাথায় মোহামেডানকে হতভম্ব করে দিয়ে এগিয়ে গেল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। শুরুর এই সুবাস মেখেই তারা পার করে দিল ৭০ মিনিট। এরপরই পাশার দান উল্টে দিয়ে, রোমাঞ্চকর জয়ে ফেডারেশন কাপের সেমি-ফাইনালে উঠল মোহামেডান।
গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার প্রথম কোয়ার্টার-ফাইনালে মোহামেডানের জয় ২-১ গোলে। শিরোপাধারীদের দুই গোলদাতা মোজাফ্ফর মোজাফ্ফরভ ও জাফর ইকবাল। শেখ রাসেলকে শুরুতে এগিয়ে নিয়েছিলেন সেকু সিল্লাহ।
২০১২-১৩ মৌসুমে প্রথম ও সবশেষ ফেডারেশন কাপ জিতেছিল শেখ রাসেল। এরপর আর কখনই এই প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেতে পারেনি তারা। তাদের সে অপেক্ষা বাড়ল আরও।
যদিও শেখ রাসেলের শুরুটা ছিল দারুণ আশা জাগানিয়া। কিক অফের পর বল ঘুরছিল দলটির খেলোয়াড়দের পায়ে। মাঝমাঠ থেকে মনির আলম আচমকাই লম্বা ক্রস বাড়ালেন বক্সে, সেকু সিল্লাহর হেডে বল লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষক সুজন হোসেনকে বোকা বানিয়ে খুঁজে নেয় জাল।
পাল্টা জবাব দেওয়ার সুযোগ মোহামেডানের দুয়ারে কড়া নাড়ে পঞ্চম মিনিটেই। আরিফ হোসেনের কাটব্যাকে বল ছয় গজ বক্সে পেয়েও যান এমানুয়েল সানডে, কিন্তু নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ড গোলকিপার মিতুল মারমার গায়ে মেরে বসেন।
সপ্তম মিনিটে বক্সের ঠিক ওপর থেকে মোজাফ্ফরভের নিচু ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালে লেগে প্রতিহত হয়। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় শেখ রাসেলের রক্ষণে বারবার ভীতি ছড়াতে থাকে মোহামেডান, কিন্তু মিতুলকে ভড়কাতে পারেনি তারা।
২৩তম মিনিটে সানডের কাটব্যাকে সুলেমানে দিয়াবাতের শট গ্লাভসের টোকায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে কোনোমতে বের করে দেন মিতুল। কর্নারে প্রথম দফায় ফিস্ট করে ক্লিয়ার করার পর কামরুল ইসলামের দুর্বল শটও আটকান তিনি।
৩৬তম মিনিটে শাহিনকে ছিটকে দিয়ে দূরূহ কোণ থেকে শট নিয়েছিলেন আরিফ, কিন্তু বল খুঁজে পায়নি জাল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মোহামেডানের আক্রমণে চেনা আগ্রাসনের ছাপ ছিল না তেমন একটা। তবে লেগে থাকার ফল অবশেষে ৭০তম মিনিটে পায় তারা। বক্সের ভেতর থেকে দিয়াবাতের জন্য শট নেওয়া কঠিন ছিল। মালির এই ফরোয়ার্ড তাই বল বাড়ান বক্সের বাইরে থাকা মোজাফ্ফরভের উদ্দেশে। উজবেকিস্তানের এই মিডফিল্ডারের বুলেট গতির শট মিতুলের প্রতিরোধের দেয়াল গুঁড়িয়ে জালে জড়ায়।
এরপর খেলা আবারও চলতে শুরু করে ঢিমেতালে। সম্ভাব্য ড্রয়ের দিকে ছুটকে থাকা ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ফেরে রোমাঞ্চ। ঝটিকা আক্রমণে গোল তুলে নেয় মোহামেডান।
মোজাফ্ফরভের পাস ধরে আরিফ আড়াআড়ি ক্রস বাড়ান বক্সে। প্রথম স্পর্শে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাফর শট নেন, কিন্তু সামনে থাকা দানি আতান্দা প্রতিহত করেন। ফিরতি বল পেয়ে আর ভুল করেননি জাফর। দেখেশুনে ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা এই ফরোয়ার্ড। মুকুট ধরে রাখার পথে মোহামেডান এগিয়ে যায় আরেক ধাপ।