লা লিগা
চোখধাঁধানো দুটি গোলে সুর বেঁধে দিলেন কিলিয়ান এমবাপে ও ফেদেরিকো ভালভের্দে, জয় দিয়ে বছর শেষ করল কার্লো আনচেলত্তির দল।
Published : 22 Dec 2024, 11:15 PM
চেনা আঙিনায় ম্যাচজুড়ে আক্রমণে দাপট দেখাল রেয়াল মাদ্রিদ। চোখধাঁধানো দুটি গোলে সুর বেঁধে দিলেন কিলিয়ান এমবাপে ও ফেদেরিকো ভালভের্দে। সেভিয়াকে অনায়াসে হারিয়ে, বার্সেলোনাকে হটিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে উঠল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার লিগ ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এমবাপে ও ভালভের্দের গোলের পর রদ্রিগোর লক্ষ্যভেদে ৩৪ মিনিটের মধ্যে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রেয়াল। পরক্ষণে ইসাক রোমেরো ব্যবধান কমানোর পর দ্বিতীয়ার্ধে রেয়ালের চতুর্থ গোল করেন ব্রাহিম দিয়াস। শেষ দিকে আরেকটি গোল শোধ করেন দোদি লুকবাকিও।
এই ম্যাচ দিয়ে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান সেভিয়ার হয়ে দুই দশকের অধ্যায়ে রেকর্ড ৭০৫ ম্যাচ খেলা হেসুস নাভাস। ম্যাচ শুরুর আগে ৩৯ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ডকে ‘গার্ড অব অনার’ দেয় দুই দলের খেলোয়াড়রা।
গত সপ্তাহে ফিফা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জয়ের পর লিগে জয় দিয়ে বছর শেষ করল রেয়াল। কার্ডের খাড়ায় এই ম্যাচে খেলতে পারেননি ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার ভিনিসিউস জুনিয়র। তবে তাকে ছাড়া রেয়ালের জয় নিয়ে একটুও ভাবতে হয়নি।
১৮ ম্যাচে ১২ জয় ও ৪ ড্রয়ে শিরোপাধারীদের ৪০ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ১৯ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে নেমে গেছে বার্সেলোনা।
পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ১৬টি শট নিয়ে ৮টি লক্ষ্যে রাখে রেয়াল। সেভিয়ার ১০ শটের ৫টি লক্ষ্যে ছিল।
শুরু থেকে পজেশন ধরে রেখে খেলা রেয়াল দশম মিনিটে এগিয়ে যায় এমবাপের দুর্দান্ত গোলে। রদ্রিগোর পাস বক্সের বাইরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের জোরাল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড।
ক্লাবের হয়ে টানা চার ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন তিনি। পিএসজিতে চুক্তির মেয়াদ শেষে গত গ্রীষ্মে রেয়ালে যোগ দেওয়ার পর স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৪ ম্যাচে তার গোল হলো ১৪টি।
সপ্তদশ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ হারান এমবাপে। ডান দিক থেকে লুকাস ভাসকেসের পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মারেন তিনি।
২০তম মিনিটে আরেকটি দর্শনীয় গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভালভের্দে। ছোট করে নেওয়া কর্নারের পর দানি সেবাইয়োস ও এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার পা ঘুরে বল পান ভালভের্দে। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান উরুগুয়ের তারকা।
তিন মিনিট পর অল্পের জন্য গোল পাননি রদ্রিগো। বক্সের ভেতর থেকে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের জোরাল শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।
৩৪তম মিনিটে ঠিকই জালের দেখা পান তিনি। ভাসকেসের পাস বক্সে পেয়ে প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ২৩ বছর বয়সী ফুটবলার।
পরের মিনিটেই একটি গোল শোধ করে দেয় সেভিয়া। ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে বক্সে অনেকটা লাফিয়ে হেডে জালে পাঠান অরক্ষিত রোমেরো।
৪৩তম মিনিটে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ভাসকেসের নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন সেভিয়ার গোলরক্ষক। পরক্ষণে সেবাইয়োসের শট প্রতিহত করেন এক ডিফেন্ডার।
৫৩তম মিনিটে তিন গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন ব্রাহিম। ভাসকেসের পাস পেয়ে এমবাপে বল দেন বক্সের ভেতর ব্রাহিমকে। কাছ থেকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ২৫ বছর বয়সী উইঙ্গার।
দর্শকদের তুমুল করতালির মাঝে ৬৫তম মিনিটে বদলি নামেন নাভাস। ৭৩তম মিনিটে তার পাস থেকে রোমেরোর শট পোস্টে বাধা পায়।
৮২তম মিনিটে এমবাপের শট ঠেকান গোলরক্ষক। ৮৫তম মিনিটে ব্যবধান কমান লুকবাকিও। সতীর্থের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন তিনি। রেয়ালের জয় নিয়ে অবশ্য সংশয় জাগেনি কখনোই।