বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ
রোমাঞ্চকর জয়ের আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত মোহামেডানকে হারাতে পারেনি রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি।
Published : 17 May 2024, 06:46 PM
লিগ শিরোপা বসুন্ধরা কিংস ঘরে তুলেছে আগেই। স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা হয়ে যাওয়া এই অংশে মোহামেডান ও আবাহনীর লক্ষ্য পয়েন্ট টেবিলে যতটা সম্ভব উপরে থেকে শেষ করা। এই দুই বড় দলের অবশ্য ষোড়শ রাউন্ড ভিন্ন রকম কাটল। আবাহনী পেল বড় জয়। দারুণ শুরুর পর পথ হারানো মোহামেডান অবশেষে স্বস্তির ড্রয়ে ছাড়ল মাঠ।
গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শুক্রবার লিগের তলানির দল ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দেয় আবাহনী। ৪ গোল করেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। ওয়াশিংতন ব্রান্দাও ২টি ও মেরাজ হোসেন অপি করেন ১টি গোল।
যদিও শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলা আবাহনীর চোখে চোখ রেখে খেলার চেষ্টা করতে থাকে ব্রাদার্স। দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করলেও দলটি পায়নি গোলের দেখা। উল্টো দশম মিনিটে সতীর্থের পাস ধরে বাম দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুণি শটে কাছের পোস্ট দিয়ে ওয়াশিংতন লক্ষ্যভেদ করলে পিছিয়ে পড়ে তারা।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুই গোলে ম্যাচে চালকের আসনে বসে যায় আবাহনী। ৬৪তম মিনিটে কর্নেলিয়াসের গোলমুখে বাড়ানো আড়াআড়ি ক্রস গোলরক্ষক, ডিফেন্ডার কেউই ক্লিয়ার করতে পারেননি; বল চলে যায় দূরের পোস্টে থাকা ওয়াশিংতনের কাছে। টোকা দেওয়ার কাজটুকু অনায়াসে সারেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
৭০তম মিনিটে ওয়াংশিতনের পাস বুদ্ধিদ্বীপ্ত টোকায় বের করে নিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন কর্নেলিয়াস। নয় মিনিট পর স্পট কিক থেকে নদির মাভলোভোন ব্রাদার্সকে ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ্য এনে দেন।
কিন্তু শেষ দিকে আরও চার বার গোল উৎসব করে বড় জয় নিশ্চিত করে নেয় আবাহনী। ৮৬তম মিনিটে মেহেদী হাসান রয়েলের আড়াআড়ি পাস গোলমুখ থেকে টোকায় জালে জড়ান কর্নেলিয়াস। ৯০তম মিনিটে ব্রাদার্সের ঢিলেঢারা রক্ষণের ফাঁক গলে বেরিয়ে নিখুঁত শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রানাডিনেসের এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে কর্নেলিয়াস ও মেরাজ জালের দেখা পেলে চলমান লিগে নিজেদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আন্দ্রেয়াস ক্রুসিয়ানির দল।
দিনের অন্য ম্যাচে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ৩-৩ ড্র করে মোহামেডান।
প্রথমার্ধে দুই গোলে চালকের আসনে বসে যায় মোহামেডান। পঞ্চম মিনিটে কর্নারের পর গোললাইনের ঠিক উপরে থাকা এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল চলে যায় জাফর ইকবালের কাছে। কোনমতো নেওয়া শটে বল জালে জড়িয়ে দেন এই ফরোয়ার্ড।
২১তম মিনিটে এমানুয়েল সানডের ছোট পাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সুলেমানে দিয়াবাতের পাহারায় ছিলেন না ডিফেন্ডারদের কেউ। নিচু কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মোহামেডান অধিনায়ক।
এরপরই ভোজবাজির মতো বদলে যায় দৃশ্যপট। সাত মিনিটের মধ্যে দুই গোল হজম করে বসে আলফাজ আহমেদের দল। ৩৪তম মিনিটে ডিফেন্ডার কামরুল ইসলামকে অনায়াসে কাটিয়ে জায়গা করে নিয়ে জোরালো শটে রহমতগঞ্জকে ম্যাচে ফেরান আর্নেস্ট বোয়াটেং। ৪১তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে পুরান ঢাকার দলটিকে সমতায় ফেরান স্যামুয়েল কোনি।
৬৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ। জাগায় দ্বিতীয় জয়ের আশা। বোয়াটেংয়ের থ্রু পাস ধরে গতি দিয়ে মোহামেডানের দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে যান কোনি। এরপর আগুয়ান গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে।
কিন্তু শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে মোহামেডানকে সমতার স্বস্তি এনে দেন দিয়াবাতে। জুয়েল মিয়ার ক্রসে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন মালির এই ফরোয়ার্ড।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় দিনের অন্য ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ১-১ ড্র করেছে। একাদশ মিনিটে পল কোমোলাফের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রামের দলটি। ৭৩তম মিনিটে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড আতান্দা ওগুনবে সমতায় ফেরান শেখ রাসেলকে।
১৬ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডান দ্বিতীয় স্থানে আছে। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে তৃতীয় স্থানে থাকা আবাহনীর সুযোগ আছে দ্বিতীয় হয়ে লিগ শেষ করার।