প্রথম লেগে আর্সেনালের মাঠে বিধ্বস্ত হলেও পরের লেগে ঘরের মাঠে জ্বলে উঠে সেমি-ফাইনালে যাওয়া সম্ভব, বিশ্বাস রেয়াল মাদ্রিদের কোচ ও ফুটবলারদের।
Published : 09 Apr 2025, 02:01 PM
ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ সব অধ্যায় গত কয়েক বছরে রচনা করেছে রেয়াল মাদ্রিদ। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। কখনও তা ছিল অবিশ্বাস্য, কখনও রূপকথার মতো। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ২০২২ সালে স্মরণীয় সেই প্রত্যাবর্তনের ঠিক আগে ধারাভাষ্যকার পিটার ড্ররি যেমন বলেছিলেন, ‘রেয়াল মাদ্রিদ ইজ আ মিরাকল ক্লাব, ক্রেজি থিংস হ্যাপেন হিয়ার…।”
শিরোপা ধরে রাখার আশা জিইয়ে রাখতে আরও একবার তেমন কিছু করে দেখাতে হবে তাদের। এসব যদিও বলেকয়ে হয় না। তার পরও দলের ভেতর থেকে বিশ্বাসের বুদবুদ উঠছে। পরের লেগ যে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে!
আর্সেনালের মাঠে যেমন খেলেছে রেয়াল, তেমন কিছু করলে অবশ্য আরেকটি বিব্রতকর অভিজ্ঞতা তাদের অপেক্ষায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগ ৩-০ ব্যবধানে হেরেও তারা কিছু স্বস্তি পেতে পারে। থিবো কোর্তোয়া অতিমানবীয় পারফরম্যান্স না দেখালে যে ব্যবধান ৪-০ বা ৫-০ হতেও পারত!
প্রথমার্ধে দুই দল ছিল প্রায় সমানে সমান। দ্বিতীয়ার্ধে রেয়ালকে স্রেফ ছিন্নভিন্ন করে দেয় আর্সেনাল। ডেক্লান রাইসের অসাধারণ দুটি ফ্রি-কিকের গোলের পর মাঠে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না চ্যাম্পিয়নদের। আর্সেনালের প্রতিটি আক্রমণেই মনে হচ্ছিল, গোল হয়ে যেতে পারে। শেষ বাঁশি তাই অনেকটাই স্বস্তিদায়ক হয়ে এসেছে আনচেলত্তির দলের জন্য।
ম্যাচের পর নিজেদের সেই ব্যর্থতা অকপটেই মেনে নিলেন রেয়াল মাদ্রিদ কোচ।
“এমন হার মেনে নেওয়া কঠিন অবশ্যই। এমন কিছু আমরা আশা করিনি। তবে সেট-পিস থেকে ২-০ হয়ে যাওয়ার পর, আমরা ভেঙে পড়ি। ম্যাচটা খুব বাজেভাবে শেষ করেছি আমরা। এই দল এমনিতে জবাব দেয়, তবে আজকে শেষ ৩০ মিনিট ছিল খুবই বাজে। আত্ম-সমালোচনা করতে হবে আমাদের এবং ঘুরে দাঁড়াতে সম্ভব সবকিছুই করব।”
সেটা আদতে কতা সম্ভব? চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জমানায় এমন কিছু আগে করতে পারেনি রেয়াল। টুর্নামেন্টের নাম যখন ছিল ইউরোপিয়ান কাপ, তখন অবশ্য একটি নজির তাদের আছে। ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে প্রথম লেগে ডার্বি কাউন্টির মাঠে ৪-১ গোলের হারের পর দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে ৫-১ ব্যবধানে জিতেছিল তারা।
প্রায় ৫০ বছর আগের স্মৃতি থেকে প্রেরণা পাওয়া কঠিন। তবে এমন অনেক কিছুই গত কয়েক মৌসুমে রেয়াল মাদ্রিদ করেছে, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। বিশেষ করে, নিজেদের মাঠে। আনচেলত্তি তাই বিশ্বাসটা রাখছেন।
“বের্নাবেউয়ে অনেক কিছুই হতে পারে। আজকে রাতের পর মনে হতেই পারে যে, আর কোনো সুযোগ নেই। তবে ফুটবলে সবসময়ই সুযোগ কিছু না কিছু থাকে। কেউ ধারণা করতে পারেনি, আর্সেনাল সেট-পিস থেকে দুটি গোল করবে। তবে কখনও কখনও এসব হয়েই থাকে। বিশ্বাসটা রাখতে হবে আমাদের (ঘুরে দাঁড়ানোর)।”
“আগেও আমরা অনেকবার করেছি এবং আরও একবার তা করতে হবে। কাজটা খুবই কঠিন। তবে চেষ্টা করে যেতে হবে প্রথম মিনিট থেকে শেষ পর্যন্ত।”
বিশ্বাসটা যে শুধু তার একার নয়, ম্যাচ শেষে সেটি বললেন অনেক লড়াইয়ের স্বাক্ষী অভিজ্ঞ তারকা লুকাস ভাস্কেসও।
“লড়াইটা এখন খুবই কঠিন। তবে বিশ্বে কোনো দল যদি ৩-০ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেটি রেয়াল মাদ্রিদই, আমাদের মাঠে আমাদের সমর্থকদের সঙ্গী করে নিয়ে।”
পরের লেগ আগামী বুধবার।