নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী স্বপন হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী স্বপনের নিখোঁজ ও তার মৃত্যুর যোগসূত্র পায় ডিবি।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 10:51 AM
Updated : 29 Nov 2022, 10:51 AM

নারায়ণঞ্জে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা এই রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাকসুদা আহমেদ।

রায়ে আসামি পিন্টু দেবনাথ মৃত্যুদণ্ড ও রত্না চক্রবর্তী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন। এই মামলায় খালাস পেয়েছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে আরেক আসামি। রায় ঘোষণার সময় তিনজনই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মামলার নথির সূত্রে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মাকসুদা আহমেদ জানান, ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন শহরের নিতাইগঞ্জের সনাতন চন্দ্র সাহার ছেলে স্বপন কুমার সাহা। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হলেও খোঁজ মেলেনি স্বপনের।

এদিকে ২০১৮ সালের ১৮ জুন নিখোঁজ হন শহরের আমলাপাড়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ। নিখোঁজের ২১ দিন পর ৯ জুলাই রাতে বন্ধু পিন্টু দেবনাথের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রবীরের টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী স্বপনের নিখোঁজ ও তার মৃত্যুর যোগসূত্র পায় ডিবি। এরপর স্বপনের নিখোঁজের দেড় বছর পর ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই তার বড়ভাই অজিত কুমার সাহা সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মাকসুদা আহমেদ বলেন, “স্বপন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর পিন্টু, রত্না ও মামুন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা জানায়, অর্থ লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্বপনকে হত্যা করে পিন্টু। তাকে সহযোগিতা করে বান্ধবী রত্না।

“পরে লাশ টুকরো করে একাধিক বাজারের ব্যাগে ভরে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। আসামিরা স্বীকারোক্তি দিলেও নিহতের মরদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

“তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ নিহত স্বপনের মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটিসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করে। ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর পিন্টু, রত্না ও মামুনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন ডিবির তৎকালীন এসআই মফিজুল ইসলাম।”

বাদী, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।

উল্লেখ্য, স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ হত্যা মামলাতেও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন পিন্টু দেবনাথ। ২০১৯ সালের ২৯ মে জেলা ও দায়রা জজ আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।