গোলাগুলির আতঙ্ক, রুমার পাড়ায়-পাড়ায় স্কুল বন্ধ

রুমার ওসি বলেছেন, ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ ভারতে তাদের আত্মীয়দের কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

উসিথোয়াই মারমাবান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2023, 01:35 PM
Updated : 1 March 2023, 01:35 PM

গত কয়েক মাস ধরে সশস্ত্র ‘বম পার্টি’ ও নতুন জঙ্গি দল ‘জামায়াতুল আনসার হিল ফিন্দাল শারক্বীয়া’র বিরুদ্ধে ধারাবাহিক যৌথ অভিযানে গোলাগুলির মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বান্দরবানের গহীন পাহাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে। ‘বিরূপ পরিস্থিতির’ মুখে শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসায় রুমা উপজেলার পাড়ায়-পাড়ায় বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও বলছে, ‘কিছু মানুষ’ ভয়ে পাড়া ছেড়ে পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। স্বচ্ছল কিছু পরিবার তাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য উপজেলা সদর বা জেলা শহরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

উপজেলার যে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে বা প্রায় বন্ধের পথে রয়েছে সেগুলো হচ্ছে- পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরথাহ্ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাসত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের পাকনিয়ার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুননুয়াম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জেসপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিরূপ পরিস্থিতির কারণে কয়েকটি সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী কমে গেছে। আতঙ্কে অভিভাবকরা স্কুলে সন্তানদের পাঠাচ্ছেন না বলে জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থী স্কুলে না আসায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে; প্রায় বন্ধের মতোই।

“স্কুল বন্ধ থাকার বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের পরবর্তী সময়ে নির্দেশনা পেলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান মঙ্গলবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বন্ধ থাকা ছয়টি স্কুলের মধ্যে রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের পাকনিয়ার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জেসপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিসেম্বর থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যায়।

“ফলে স্কুল দুটি একবার বন্ধ হয়, একবার খোলা হয় অবস্থার মধ্যে ছিল। জানুয়ারিতে নতুন পাঠ্যপুস্তকও বিতরণ করা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে এখন একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে।”

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, “রেমাক্রিপ্রাংসা ইউনিয়নের এই দুটি স্কুলই বেশি দুর্গম এলাকায়। উঁচু-নিচু পাহাড় বেয়ে হাঁটার পথই স্কুলে যাওয়ার একমাত্র পথ। পাকনিয়ার পাড়া স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগে বেশি ছিল। বর্তমানে মাত্র ১৬-১৭ জনের মত শিক্ষার্থী রয়েছে।

“স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা এমনিতে কম। এলাকায় ‘বিরূপ পরিস্থিতি’র পর শিক্ষার্থীর উপস্থিতি আরও কমে যাওয়ায় একেবারে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। বাকি চারটি স্কুল এলাকার পরিস্থতি স্বাভাবিক হলে খোলা হয়; খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হলে আবার বন্ধ হয়ে যায়।”

আশীষ চিরানের ভাষ্য, “এখানকার শিক্ষকরা ক্লাস নিতে আগ্রহী। কিন্তু ‘পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে’ শিক্ষার্থী না আসায় স্কুলটি ‘অটো বন্ধ’ হয়ে যায়। মাঝখানে পরিস্থতি ভাল হওয়ায় মুয়ালপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরথাহ্ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাসত্লাং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছুদিন আগেও ক্লাস হয়েছিল। এখন আবার ‘বিরূপ পরিস্থিতির’ কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।”

প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবাই স্কুল বন্ধের জন্য ‘বিরূপ পরিস্থিতি’, ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’, ‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতি’ শব্দগুলো ব্যবহার করলেও এগুলোর ব্যাখ্যা দিতে তারা চান না এবং এ নিয়ে কথা বাড়াতেও তারা অনাগ্রহী।

গত বছর অক্টোবর থেকে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ, যা স্থানীয়ভাবে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত) এবং নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার হিল ফিন্দাল শারক্বীয়া’ বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব। মাঝে মধ্যে তাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটছে।  

পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠনটি অর্থের বিনিময়ে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্যদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয় বলে অক্টোবরে সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র‌্যাব। এরপর জঙ্গি সংগঠনের ৩৫ জন এবং বম পার্টির ১৭ জনের গ্রেপ্তারের খবর আসে।

জানুয়ারির শেষে রুমা উপজেলার কয়েকটি পাড়া থেকে মারমা ও বম জাতিগোষ্ঠীর লোকজন গহীন পাহাড়ের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে শহরে চলে আসেন। পাইন্দু ইউনিয়নের অন্তত ৫১টি মারমা ও ২০টি বম পরিবার রুমা বাজারের মারমা ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের হল রুমে এবং বম কমিউনিটি সেন্টারে এসে আশ্রয় নেয়। পরে তারা আবার পাড়ায় ফিরে যান।

যৌথ বাহিনীর অভিযানের মধ্যে ‘আতঙ্কে’ বান্দরবানের রুমা থানা ও আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কিছু ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন ও থানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ কারণেও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

কী সংখ্যায় মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রুমা থানার ওসি আলমগীর হোসেন বুধবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অক্টোবর ও নভেম্বর কেএনএফ ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের সময় বেশ কিছু মানুষ পাড়া ছেড়েছে। তারা ভারতে গিয়ে আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। এর সংখ্যা ৩০০ থেকে ৪০০ হতে পারে। তবে এখন আবার অনেকেই চলে আসছেন।”

জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকলেও এই সময়ে কেউ ভারতে যায়নি বলে দাবি করেছেন ওসি আলমগীর।

তিনি বলেন, “এখন কেউ যাচ্ছে এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবাই চলে আসবে।” 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলি সোমবার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, “ঠিক কতজন ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তার প্রকৃত কোনো সংখ্যা আমাদের কাছে নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করতে বলা হয়েছিল কিন্তু তারা তালিকা দেননি।

“কেউ কেউ আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন। ফলে প্রকৃত সংখ্যাটা তারাও জানতে পারছেন না।”

কেএনএফ নিজেদের পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের অনগ্রসর জনজাতিগুলোর ‘প্রতিনিধিত্বকারী’ হিসেবে তুলে ধরে। সংগঠনটি ‘কুকি-চিন রাজ্যে’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল চায়; যেখানে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরারা থাকবে না; থাকবে বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রোরা।

রুমায় কেএনএফের বেশ প্রভাব রয়েছে। সোমবার রুমায় সাপ্তাহিক হাটের দিন। এদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তাদের পণ্য নিয়ে বাজারে আসেন। বাজারে আসা দুর্গম পাহাড়িদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অনেকেই কেএনএফ বা যৌথ বাহিনীর অভিযান নিয়ে কথা বলতে অনাগ্রহ দেখান। 

তবে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কয়েকজন পাড়াবাসী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

এর মধ্যে কয়েকজন অভিভাবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এলাকায় খারাপ পরিস্থিতির কারণে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে সবাই ভয় পাচ্ছে। এ কারণে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে সবাই। সামর্থ্যবান কেউ কেউ এলাকায় বিরূপ পরিস্থিতি হওয়ার পর থেকে ছেলেমেয়েদের উপজেলা সদর ও জেলা শহরে নিয়ে এসে লেখাপড়া করাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ জুমচাষির ছেলেমেয়েকে এলাকার বাইরে পাঠিয়ে লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য নেই। এখন তারাই বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।”

আরেকজন অভিভাবক, যার সন্তান স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র; তিনি বলেন, “এমনিতে দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা নানা কারণে লেখাপড়ায় দুর্বল। তার মধ্যে আবার স্কুল বন্ধ। এলাকায় রয়েছে চাপা আতঙ্ক। সবকিছু মিলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

“কোনো বিকল্প উপায় না থাকার বাধ্য হয়ে ক্ষতি মেনে নিয়ে থাকতে হচ্ছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হয় তাও বলা যাচ্ছে না।”

এ সময় বাজারে আসা কয়েকজন পাড়াবাসী জানান, অভিযান শুরুর আগে কিছু দুর্গম এলাকায় জিপ গাড়ি যেত। অভিযানের পর থেকে এলাকায় নিরাপত্তার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে তাদেরকে তিন ঘণ্টার বেশি পথ হেঁটে আসতে হয়েছে।

স্থানীয় কার্বারি, জনপ্রতিনিধি ও নৃ-গোষ্ঠীর হেডম্যানদের বরাতে রুমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লাচিং মারমা মঙ্গলবার দুপুরে বিডিনিউিজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতির’ কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। মূলত শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসার কারণে স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে।

“আজকে (২৮ ফেব্রুয়ারি) উপজেলায় মাসিক সমন্বয় সভাতেও ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

উপজেলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সভায় উপজেলা শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, যেহেতু সন্ত্রাস ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, সে কারণে মাঝে-মধ্যে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি হচ্ছে। এ কারণে আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে। যার ফলে এই ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।”

এদিকে যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর থেকে বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি ও আলীকদম চারটি উপজেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন।

দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর পর তিনটি উপজেলা থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও রুমা উপজেলায় এখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

আরও পড়ুন

বান্দরবানে থেমে থেমে গুলি চলছে, ৫ জঙ্গি আটক

বান্দরবানে জঙ্গিদের সঙ্গে র‌্যাবের গোলাগুলি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে র‌্যাবের অভিযানে গোলাগুলি, ২ জঙ্গি নেতা গ্রেপ্তার

করতেন ডাকাতি, জেলে গিয়ে ভিড়লেন জঙ্গি দলে

নতুন জঙ্গি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক জামায়াত আমির: পুলিশ

পাহাড়ে সশস্ত্র দল; এই ‘বম পার্টি’ কারা?

নতুন জঙ্গি দল গঠনের পরিকল্পনা হয় কারাগারে: সিটিটিসি

বম পার্টির সঙ্গে নতুন জঙ্গি দলের ‘মাসিক চুক্তির’ খবর দিল র‌্যাব

নতুন জঙ্গি দল: পাহাড়ে অভিযান, তথ্য দিলে লাখ টাকা পুরস্কার

নতুন জঙ্গি দলের ‘পাহাড়ি যোগ’ পেয়েছে র‌্যাব

জঙ্গি আর পাহাড়ি দলের মিলে যাওয়ার বিপদ যেখানে

র‌্যাবের জালে নতুন জঙ্গি দল, কারা এরা?

নিখোঁজ ‘৫৫ জন’ নতুন জঙ্গি দলে, ৩৮ জনের তালিকা দিল র‌্যাব

নিখোঁজ ৪ তরুণসহ সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানাল নতুন জঙ্গি দলের নাম