“ধারণা করছি, তারা হয়তো ঘুরতে কিংবা মাদক সেবনের জন্য এসেছিল। রেললাইনে ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ওপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়।”
Published : 23 Apr 2025, 01:08 PM
“আমি ভোর ছয়টার দিকে রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখি, একজনের মাথা আর দুজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। যাদের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন তখনও জীবিত ছিলেন। তিনি আমার কাছে পানি চান।
“কিন্তু গ্রাম দূরে হওয়ায় সে সময় পানি আনার কোনো সুযোগ ছিল না। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। ধারণা করছি, ভোর সাড়ে চারটা থেকে ছয়টার মধ্যে কোনো ট্রেন তাদের ওপর দিয়ে চলে গেছে।” কথাগুলো বলছিলেন বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহেদ মিয়া।
বুধবার ভোরে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন থেকে যে তিন যুবকের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, পেশায় ইজিবাইক চালক শাহেদ সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মাধবপুর এলাকায় রেললাইনের ১৬২ নম্বর পিলারের কাছে তিন যুবকের কাটা মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়।
বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলছেন, নিহতদের বয়স আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে হবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ভোরের দিকে কোনো ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা তাদের।
প্রত্যক্ষদর্শী ফকির বাজার জঙ্গলবাড়ি এলাকার গাড়ি চালক মেহেদী হাসান বলছিলেন, “যে তিনজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে, তারা আশেপাশের গ্রামের কেউ নয়। অনেকেই তাদের দেখেছে, কিন্তু কেউ তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি।”
স্থানীয় সংবাদকর্মী আক্কাস আল মাহমুদ হৃদয় বলেন, “যেখানে তিনজনের মরদেহ পাওয়া গিয়েছে, সেখানে একটি পরিত্যক্ত ডাকবাংলো আছে। এখানে অনেকেই মাদক সেবনের জন্য আসে বলে আমরা বিভিন্ন সময়ে খবর পাই। ধারণা করছি, তারা এখানে হয়তো ঘুরতে কিংবা মাদক সেবনের জন্য এসেছিল। পরে রেললাইনে ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ওপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়।”
কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সোহেল মোল্লা বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে খণ্ডিত মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ আপাতত ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। সিআইডির মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।