মোংলা ইপিজেডে কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই, বিক্ষোভ-ভাঙচুর

এ সময় পুলিশ ও ইপিজেডের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাঁধে। 

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2024, 03:03 PM
Updated : 25 March 2024, 03:03 PM

বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডে একটি কারখানায় ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।

সোমবার সকাল থেকে ভিআইপি লাগেজ কারখানার শ্রমিকরা ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ইপিজেডের ফটকে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় পুলিশ ও ইপিজেডের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। 

এ সময় শ্রমিকরা কারখানায় ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ করেছেন মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম। তিনি জানান, পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভিআইপি লাগেজের সাতটি প্ল্যান্টের প্রায় এক হাজার ৮০০ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। সোমবার সকালে কাজে এসে এমন খবর শুনে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির সাতটি প্ল্যান্টের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে ইপিজেডের ফটকে গেলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের আটকে দেয়। সেখান থেকে বের হতে না পেরে শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ওসি আজিজুল ইসলাম বলেন, “মূলত সকাল ৯টা থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়। ইপিজেডের ভিআইপি লাগেজ কারখানায় রোববার তাদের প্রায় ১ হাজার ৮০০ শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। গতকাল সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ সোমবার তারা ছাঁটাই কার্যকর করেছে।

“প্রতিষ্ঠানটি (ভিআইপি লাগেজ) বলছে, তারা নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের এক মাসের বেতন, ভাতা ও বোনাস প্রদান করেছে। তবে শ্রমিকরা বলছেন, তারা টাকা পাননি।”

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। ১১টার দিকে শ্রমিকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত, শ্রমিকরা ইপিজেড ফটক ছেড়ে চলে গেছে বলে জানান ওসি।

এদিকে বিক্ষোভরত সুবর্ণা ও তানিয়া নামের ওই কারখানার দুই শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, তারা বেতন-ভাতা পাননি। সেই কারণেই তারা বিক্ষোভে নেমেছেন। তার মধ্যে পুলিশের হামলায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। 

তবে এ বিষয়ে চেষ্টা করেও মোংলা ইপিজেড এবং ভিআইপি লাগেজ কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, “মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি কারখানার শ্রমিকদের ছাঁটাই কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়মের মধ্যে থেকেই তারা কর্মী ছাঁটাই করছে। তবে শ্রমিকদের দাবি, তারা যথাযথ পাওনা তারা বুঝে পায়নি। এটা নিয়েই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

“এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা ইপিজেড ফটকে জড়ো হয়। আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি, তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করে, কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়। কিন্তু একপর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ আশপাশে ভাঙচুর শুরু করে।”

তখন বাধ্য হয়ে রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।