“ভোটার উপস্থিতি যদি ভালো হয়, তবে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী,” বলছেন বিএনপি পরিবারের সন্তান রুপন।
Published : 12 Jun 2023, 11:21 AM
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কিছু কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন মেয়র পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের এই প্রার্থী বলছেন, শেষ পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি ভালো হলে জয়ের ব্যাপারে তিনি ‘শতভাগ আশাবাদী’।
বিএনপি এবার ভোটে না থাকলেও বিএনপি পরিবারের সন্তান রুপন দলীয় ভোটারদের নিজের পক্ষে পাওয়ার আশা করছেন। সেমবার ভোট শুরুর পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কালুশাহ সড়কের আলেকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের ভোট দেন তিনি।
ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও কিছু কেন্দ্রে টেবিল ঘড়ির এজেন্টদের ‘হয়রানি করা হচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেন রুপন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কিছু কিছু কেন্দ্র থেকে অভিযোগে আসছে- আমাদের পোলিং এজেন্টকে এখন পর্যন্ত কার্ড দিচ্ছে না, ঢুকতে দিচ্ছে না। তারা প্রার্থীর সিগনেচার চাচ্ছে, কিন্তু সেখানে আমার যে প্রধান এজন্টে, তার সাক্ষর আছে, তারপরও তারা... এটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।”
এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, “পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্র, সেখানে পোলিং এজেন্ট ঢুকতে পারছে না, কারণ যে প্রিজাইডিং অফিসার তার একটাই বক্তব্য কথা- এই এজেন্ট ফরম গতরাতে নিয়ে আসার কথা। কিন্তু এ ধরনের কোনো কথা আগে জানানো হয়নি।”
কোন কোন কেন্দ্রে এমন সমস্যা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি তা বলেন, নামগুলো তিনি পরে জানাবেন।
কেন এমন করা হবে– এমন প্রশ্নের জবাবে রুপন বলেন, “হয়তো ভোটরে ফলাফল যদি পরিবর্তন হয়, যদি তাদের আশঙ্কা থাকে...। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ফুফাত ভাই এখানে মেয়র প্রার্থী। হয়ত তার পক্ষ নেওয়ার জন্যই সরকার এই কাজটা করতেছে।”
সকালে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এত কম সময়ে ভোটের মাঠের যে চিত্র, সঠিকভাবে এখনো বলা যায় না। কারণ দিনের বাকিটা সময় আছে।
“তবে এখন পর্যন্ত যেটুক হচ্ছে... এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি খারাপ না।”
এ বিষয়ে বলার জন্য আরও সময় চেয়ে নিয়ে রুপন বলেন, বেলা ১২টার দিকে তিনি আবার ব্রিফ্র করবেন। তার ভাষ্য, তিন ঘণ্টা পর বোঝা যাবে, ‘আসলে উপস্থিতি’ কেমন।
নিজের জয়ের আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “ভোটার উপস্থিতি যদি ভালো হয়, তবে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। মানুষ যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারে, নির্বাচন কমিশন যদি শান্তিপূর্ণভাবে এজেন্টদের ঢুকতে দেয়...।”
ইভিএম নিয়ে ‘কিছুটা সমস্যা’ হচ্ছে অভিযোগ করে এই প্রার্থী বলেন, “ইভিএমে এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাত্র চারটি ওয়ার্ডে হয়েছে, এবার ৩০টি ওয়ার্ডে হচ্ছে। বরিশালে অনেক সাধারণ মানুষ আছে যারা ইভিএম সম্পর্কে ততটা জ্ঞান রাখেন না, অতটা বোঝেন না। কারণ আমার নিজেরও বুঝতে একটু সমস্যা হয়েছে।
“তারপরও আমি মনে করি ভোটকেন্দ্রে আসলে… তারা যেহেতু সহযোগিতা করছে এটা সম্ভব হবে, ভোট দেওয়া।”
রুপনের বর্তমানে কোনো পদ না থাকলেও তিনি এক সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ছিলেন। তার বাবা আহসান হাবীব কামাল ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের মেয়র শওকত হোসেন হীরনকে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন।
দলের সিদ্ধান্ত উপক্ষো করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় রুপনকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তার সঙ্গে বহিষ্কার করা হয়েছে ১৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং তিন জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীকেও।
রুপনসহ মোট সাতজন প্রার্থী বরিশালের মেয়র হওয়ার ভোটের লড়াইয়ে আছেন। তাদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে আছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।
এছাড়া জাতীয় পার্টির মো. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (হাতপাখা), জাকের পাটির মিজানুর রহমান বাচ্চু গোলাপফুল) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আলী হোসেন হাওলাদার (হরিণ), মো. আসাদুজ্জামান (হাতি) ও মো. কামরুল আহসান (টেবিল ঘড়ি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মেয়র পদে।
আরও পড়ুন
শেষ দিনে রুপনের ইশতেহার, জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি