“বিএনপির পরিবারেই আমার জন্ম; আমি বিএনপির বাইরের কেউ নই।”
Published : 10 Jun 2023, 08:53 PM
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার শেষ হচ্ছে শনিবার। আর এ দিনেই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী মো. কামরুল আহসান রুপন।
শনিবার দুপুর ২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
মূল কর্মপ্রেরণা হিসেবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার কথা ইশতেহারে উল্লেখ করেছেন রুপন।
ঘোষিত ইশতেহারে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা ও জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ত্রৈমাসিক কর্মসূচির পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মেয়রের জবাবদিহিতা, নগরবাসীর অধিকার’ কর্মসূচি।
পারিবারিক ঐতিহ্য, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে পাওয়া নীতি-আদর্শের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নগরবাসীর দুর্দশা লাঘব করতে চান বলে জানালেন রুপন।
তিনি বলেন, “শতভাগ নিষ্ঠা, সততা, অর্জিত মেধা দিয়ে একটি আধুনিক, পরিবেশবান্ধব, ডিজিটাল ও মানবিক বরিশাল নগর উপহার দিতে চাই।”
টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা রুপন বলেন, “আমার বাবা আহসান হাবিব কামাল প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সফল মেয়র হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন নগরবাসীর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তার নীতি-আদর্শ বুকে ধারণ করে নগরবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতেই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।”
সিটি করপোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে হাট-বাজারের ইজারা, দরপত্র ও সম্পদ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে তার ইশতেহারে। ব্যবসা-বাণিজ্যর সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের কথাও ইশতেহারে বলেছেন রুপন।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, নগরবাসীর ওপর আরোপ করা বাড়তি কর নতুন করে নির্ধারণ করা হবে, ডিজিটাল হবে জন্ম, মৃত্যু সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়া। চালু করা হবে পানি শোধনাগার, গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য আর অর্থ জমা নেওয়া হবে না।
নগরীর জন্য সড়ক ও ড্রেন তৈরির ক্ষেত্রে জনগণের চাহিদা মাথায় রাখার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে ব্যাটারিচালিত যানবাহনগুলোকে আধুনিক ও মানবিক কাঠামোর মধ্যে নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে রুপনের।
এ ছাড়া নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে মাসিক মেডিকেল ক্যাম্প চালু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা, বেকার তরুণ-তরুণীদের জন্য আইসিটি ও আউটসোর্সিং সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, হকারদের পুনর্বাসন ও হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ইশতেহারে।
ইশতেহার ঘোষণার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুপন বলেন, “বিএনপির পরিবারেই আমার জন্ম। স্বাভাবিক কারণেই আমি বিএনপির বাইরের কেউ নই। দ্বিধা-বিভক্তি কিংবা ভাগ করার কিছু নেই। যারা বিএনপিকে ভালোবাসে, তারা কখনো অন্য কোনো প্রতীকে ভোট দেবে না।”
সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েও যারা নির্বাচন করছেন তাদের সঙ্গে সমন্বয় রয়েছেন বলেও জানালেন রুপন।
কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন না জানিয়ে রুপন বলেন, “একটি কারণ আমি সব সময় বলেছি, যদি মেরে ফেলা হয় তাহলেই কেবল আমাকে পাওয়া যাবে না। একজন মৃত মানুষ তো আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না।”
সুষ্ঠু ভোট হলে ফলাফল মেনে নেবেন বলে জানান টেবিল ঘড়ির এই প্রার্থী।
রুপন বলেন, “বরিশালের মানুষ বিশ্বাস করে একটি বিপ্লবের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন হবে। তারা বিশ্বাস করে আমার দল জাতীয়তাবাদী দল সামনে ক্ষমতায় আসবে। সেই বিশ্বাস রেখেই আমাকে ভোট দেবে।”