শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, “কমপক্ষে ৮০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তের পর ক্ষতিগ্রস্ত মোট দোকানের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।”
Published : 30 Oct 2023, 07:56 AM
দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার শেখেরচর-বাবুরহাটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৮০টি দোকান পুড়ে গেছে।
শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি ও শীলমান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার রাত ১১টার দিকে বণিক সমিতির পুরাতন অফিস সংলগ্ন গলিতে লাগা আগুন ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত সোয়া ২টার দিকে নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট।
বাজারের বৈদ্যুতিক বাতির খুঁটি থেকে শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন বণিক সমিতির সভাপতি।
প্রতি শুক্র থেকে রোববার পাইকারি এই হাটে চলে কাপড়ের বেচাকেনা।
ব্যবসায়ী, বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটের শেষ রোববার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বণিক সমিতির পুরাতন অফিসের গলিতে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান স্থানীয়রা। মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাজারের গলির ৭০-৮০টি দোকানে; আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
দোকান মালিকরা লোকজন নিয়ে মালামাল সরানোর চেষ্টা ও আগুন নেভানোর কাজে নামেন। অনেক ব্যবসায়ী নিজেদের দোকান চোখের সামনে পুড়তে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
খবর পেয়ে মাধবদী ও নরসিংদীসহ আশপাশের ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
তবে বাজার গলিতে প্রবেশ মুখের সেতু ভাঙ্গা থাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে পারেনি। পরে রিজার্ভ ট্যাংকির পানি ও পাশের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
ঢাকা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বলেন, “এখানে প্রায় সবগুলো টিনের ঘর হওয়ায় ভেতরে পানি ঢুকছিল না, এজন্য টিন ভেঙ্গে পানি দিতে হয়েছে। আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষনিকভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।”
শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, “কমপক্ষে ৮০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তের পর ক্ষতিগ্রস্ত মোট দোকানের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম ও পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আগুন লাগার সময় একটি চক্র লুটপাটের চেষ্টা করে, এমনটা যাতে না হয়, আমাদের ৭০ জনের মত ডিবি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছে।
“অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা যানজট ও বাড়তি লোকজনের ভীড় এড়াতে দায়িত্ব পালন করে ফায়ার সার্ভিসকে আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করেন।”
তদন্ত কমিটি
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চিত্রা শিকারীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম।
এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা করে সরকারিভাবে সহায়তার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।