কিছু জেলায় বিদ্যুৎ ফিরেছে

বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এখনও বিদ্যুৎ ফিরেনি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2022, 12:56 PM
Updated : 4 Oct 2022, 12:56 PM

জাতীয় গ্রিডের একটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাটের কারণে দেশের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের প্রায় তিন ঘণ্টা পর ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু এলাকায় তা ফিরতে শুরু করেছে। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের জেলা শহরের গ্রাহকরা প্রায় চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, “জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইন-১ এ হঠাৎ করে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সারাদেশের মতো ময়মনসিংহেও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এটি জাতীয় সমস্যা।”

তবে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে জেলা শহরের বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সবখানেই সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে বলে জানান এই প্রকৌশলী।

ময়মনসিংহ শহরের একজন গ্রাহক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে স্বাভাবিক হয়।”

নেত্রকোণা জেলা শহরের একজন গ্রাহক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়। ৫টার দিকে একবার আসে। আধাঘণ্টা থেকে তারপর আবার চলে যায়। ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আবার এসেছে। ১৫ মিনিট থেকে আবার চলে গেছে। আসা-যাওয়ার মধ্যে আছে।“

শেরপুর শহরের একজন গ্রাহক জানান, তার শহরে দুপুরে বিদ্যুৎ চলে যায়। সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সাড়ে ৫টায় শহরে বিদ্যুৎ ফিরেছে। তবে জেলা শহরের বাইরের অবস্থা তিনি জানাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত রায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা শহরের বাইরে পাঁচ উপজেলা সদরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। তবে গ্রামে এখনও স্বাভাবিক হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “জেলার মোট চাহিদা ২২ মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ১৩ মেগাওয়াট।”

জামালপুর শহরের একজন গ্রাহক জানান, “দুপুর ২টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেছিল। সাড়ে ৫টায় আসছে। এখন আর যায়নি।”

পিডিবির জামালপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল কুমার সাহা সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, “জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ২২ মেগাওয়াট হলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১০ মেগাওয়াট।”

জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. আলমগীর বলেন, “এখানে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা ১১০ মেগাওয়াট হলেও সন্ধ্যায় পাচ্ছি মাত্র ২৮ মেগাওয়াট। এ কারণে জেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ নাই।“

এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদের সন্ধ্যায় বলেন, “আমাদের এখানে গ্রিডে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বিদ্যুৎ চলে এসেছে। এখন আমরা প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আগে বিদ্যুৎ সরকরাহ করব। পরে ধীরে ধীরে সব জায়গায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে।”

বিভাগের মৌলভীবাজার শহরে চার ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় বিদ্যুৎ ফিরেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার একজন গ্রাহক।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার কিছু সময় পর জাতীয় গ্রিডের একটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বড় এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। তবে ত্রুটি সারিয়ে রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

ময়মনসিংহের একজন গ্রাহক জানান, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের কারণে প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়েন গ্রাহকরা। হঠাৎ করেই পুরো জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় নগরীর প্রধান শহর গাঙ্গিনারপাড়ে দেখা যায় দোকানপাট খুলে অন্ধকারে ব্যবসায়ীদের বসে থাকতে।

অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে বাসা বাড়িতে চলে যেতেও দেখা যায়। পরে বিদ্যুৎ ফিরলে ব্যবসায়ীরা আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ফিরেন। 

নগরীর অলকা নদী বাংলা মার্কেটের কসমেটিকস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “২টার পর থেকে বিদ্যুৎ গেলেও তিন ঘণ্টায় আসেনি। পুরো শরীর ভিজে গেছে গরমে। বিদ্যুৎ না থাকায় মার্কেটেও কোনো ক্রেতাও নেই। হঠাৎ করে এমন লোডশেডিং কিছু বুঝে উঠতে পারছি না।”

(এই প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর, শেরপুর, সিলেট ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধি)

আরও পড়ুন:

Also Read: গ্রিড বিপর্যয়: বিদ্যুতের সঙ্গে পানির দুর্ভোগে ঢাকাবাসী

Also Read: বিদ্যুৎ বিপর্যয়: ডিজেলের জন্য পেট্রোল পাম্পে দীর্ঘ লাইন

Also Read: বিদ্যুৎ কখন স্বাভাবিক হতে পারে, ধারণা দিলেন পলক