বিদ্যুৎ বিপর্যয়: ডিজেলের জন্য পেট্রোল পাম্পে দীর্ঘ লাইন

ঢাকার বিভিন্ন বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনে রয়েছে জেনারেটর, সেগুলো চালাতে লাগে ডিজেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2022, 12:47 PM
Updated : 4 Oct 2022, 12:47 PM

জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাটের কারণে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ঢাকাসহ দেশের বড় এলাকা। এতে কয়েক ঘণ্টা ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন বহুতল বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন চললেও তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে ডিজেলের জন্য দেখা দিয়েছে লম্বা লাইন।

মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর বিকাল থেকেই লোকজন কনটেইনার নিয়ে তেলের জন্য লোকজন বিভিন্ন তেলের পাম্পে ভিড় জমায়।

সন্ধ্যায় মহাখালীর ক্রিসেন্ট পেট্রোল পাম্পে খালি কনটেইনার ও ড্রাম নিয়ে লোকজনকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ডিজেলের জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।

ওই পেট্রোল পাম্পে বনানীর ১৫ নম্বর রোডের একটি বাণিজ্যিক ভবনের কর্মী মো. জুয়েল কনটেইনার হাতে তেল নিতে আসেন।

তিনি বলেন, “জেনারেটরের জন্য সাধারণত ১০০ লিটার ডিজেল রিজার্ভে থাকে, দুপুর থেকে কয়েক ঘণ্টা টানা জেনারেটর চলার কারণে তেল শেষ দিকে চলে আসে। আরও কয়েক ঘণ্টা যদি কারন্ট না থাকে, তাহলে জেনারেটর বন্ধ হয়ে লিফটসহ পুরো ভবন অন্ধকার হয়ে যাবে। এ জন্য তেল নিতে আসলাম।”

গুলশান-১ এর ৭ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বাড়ির মাজেদা কমপ্লেক্সের কর্মী মো. ইউসুফ জানান, তাদের ১৫ তলা ভবনে ২১টি ফ্ল্যাট আছে। দুপুরের পর থেকেই জেনারেটর দিয়ে জরুরিভাবে বিদ্যুৎ চালু রাখা হয়েছে।

“১০০ লিটার তেল রিজার্ভ ছিল, সন্ধ্যায় তা ২০ লিটারে নেমেছে। আর কিছুক্ষণ পর জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে তেল নিতে এসে দেখি লম্বা লাইন। মনে হচ্ছে এই লাইনে থেকে তেল নেওয়া সহজ হবে না।”

মহাখালীর ক্রিসেন্ট ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার আরিফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গ্রিড বিপর্যয়ের পর ডিজেলের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। তবে তার পাম্পে ডিজেলের কমতি নেই।

একই কথা জানান গুলশান সার্ভিস স্টেশনের ক্যাশিয়ার কবির হোসেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরের পর চাহিদা দ্বিগুণ বেড়েছে। সবাই জেনারেটরের জন্য ডিজেল নিতে এসেছে।

“প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার লিটার যায়। আজ দুপুরের পর সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি লিটার চলে গেছে।”

অধিকাংশই জেনারেটরের জন্য ডিজেল নিচ্ছে বলে জানান কবির।

তিনি বলেন, “পূজার কারণে বুধবার ডিপো বন্ধ থাকার কথা। তবে পরিস্থিতির কারণে ডিপো চালু রাখলে তেল এনে বিক্রি করা যাবে।”

সায়েদাবাদের কাছে পেট্রোল পাম্প সন্ধ্যা ৭টার পর বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান সিএনজি অটোরিকশাচালক হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ নাই, অন্ধকার, তেল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কখন আসবে বিদ্যুৎ? কখন পাব তেল? আমরা এখন গভীর অন্ধকারে।”

মঙ্গলবার দুপুর ২টার কিছু সময় পর জাতীয় গ্রিডের একটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বড় এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। তবে ত্রুটি সারিয়ে রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।