ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রীর শেষ জনসভা নারায়ণগঞ্জে

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে শহরজুড়ে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জনসভায় যোগ দিতে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার শহরের ইসদাইর এলাকায় একেএম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে তিনি দলের নির্বাচনি প্রচার শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরজুড়ে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।

দুপুরে এসপি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের দায়িত্ব স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ)। তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। জনসভাস্থল ও প্রধানমন্ত্রীর আসা-যাওয়ার পথে পোশাকে ৩ হাজার পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করবেন।”

জনসভা চলাকালীন আশেপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রয়োজনে কিছু যান চলাচলের ক্ষেত্রে ‘ডাইভারশন’ ব্যবস্থা করা হবে৷”

প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থলে ইতোমধ্যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, সাজানো হয়েছে চেয়ার৷ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের ফতুল্লা স্টেডিয়ামের সামনে একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড়ে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেস্টুন সাঁটানো দেখা গেছে৷

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানান, প্রধানমন্ত্রীর সড়কপথে আসার কথা রয়েছে৷ তিনি সবশেষ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এক নির্বাচনি জনসভায় নারায়ণগঞ্জ শহরে এসেছিলেন। নির্বাচনের ছয়দিন আগে ২৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জেলার পাঁচটি নির্বাচনী আসনের মহজোট প্রার্থীদের নিয়ে জনসভায় ভাষণ দেন।

গত এক বছরে সরকারের নানা প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন উপলক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলায় তিনবার প্রধানমন্ত্রী এসেছেন। কিন্তু গত ১৫ বছরে কখনও নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেননি তিনি।

তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন বিকেলে মদনগঞ্জ এলাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় কাঁচপুর হয়ে মদনপুর দিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে সেখান দিয়েই ঢাকায় ফেরেন তিনি।

আব্দুল হাই জানান, ২০১৩ সালের ২৪ অগাস্ট আড়াইহাজার উপজেলায় উপস্থিত থেকে জেলার অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বিকালে আড়াইহাজার উপজেলায় শহীদ মঞ্জু স্টেডিয়ামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সমাবেশ থেকেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রচার শুরু করেন।

এদিকে এক যুগেরও বেশি সময় পর দলের সভানেত্রীর আগমনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয় নেতারা৷ জনসভা ঘিরে লাখো মানুষের জনসমাগম সামাল দিতে প্রস্তুতির কথাও জানান তারা৷

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নারায়ণগঞ্জ আসার খবরে আমাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে৷ এত কঠিন শিডিউলের মধ্যেও এখানে আসার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকেও সম্মানিত করছেন৷”