ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
Published : 11 Dec 2023, 07:34 PM
ফরিদপুর-২ আসনের সালথা উপজেলায় ভোট চাওয়াকে কেন্দ্রে করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ২৫ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে এ ঘটনা ঘটে সালথা থানার এসআই পরিমল কুমার বিশ্বাস জানান।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই শরিফুল ইসলাম, আবু রায়হান নূর, আব্দুল হালিম, কনস্টেবল রাজু হোসাইন এবং বাবু মিয়া। বাকি আহতদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার উপজেলার যদুনন্দী বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল হোসেন মিয়ার পক্ষে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীকে নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া অভিযোগ ওঠে জামালের অনুসারী মো. কাইয়ুম মোল্যার বিরুদ্ধে। এরপর থেকে বাজারে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
সোমবার সকালে যদুনন্দী বাজারে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামালের অনুসারী কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী শাহদাবের অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যা ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি খন্দকার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।
এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ থেকে ছয় শতাধিক সমর্থক দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পিছু হটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে পুলিশের পাঁচ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
নৌকা প্রার্থীর অনুসারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যা বলেন, “কোনো কারণ ছাড়াই সকালে যদুনন্দী নবকাম কলেজের ভেতর দেশি অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় কাইয়ুম মোল্যা ও তার লোকজন।
“পরে আমাদের লোকদের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।”
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী কাইয়ুম মোল্যা বলেন, “সকাল ৬টায় আমাদের সমর্থক টুকু ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য তাদের ভয়ভীতি ও চাপ দেওয়া হয়।
“পরে জাহাঙ্গীর যদুনন্দী বাজারে আসলে তাকে মারপিট করেন নৌকার এক সমর্থক। পরে এ নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।”
এসআই পরিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, শর্টগানের ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল বেশ কিছু দেশি অস্ত্র ও লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।
বর্তমানে ওই এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।