Published : 25 Mar 2024, 09:34 PM
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় হঠাৎ ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঝড়ে শত শত গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে কয়েক হাজার গ্রাহক। ভূট্টা ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ সদর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন ওপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের ঝড়ে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ঘর-বাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে পাশের এলাকায় বৃষ্টি হলেও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝড়টি পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়। যেদিকে গেছে সেদিকে গাছপালা, বাড়ি-ঘর, মুরগির খামার, টিনশেডের মসজিদ ঘর, ভূট্টা ও বোরো ধান মেচাকার করে দিয়েছে।
সোমবার দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, ঝড়ের তাণ্ডবে কচুয়া উত্তর ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের জিলহজ বেগম, এমরান হোসেন, হক মিয়া, আলী আহমেদের বসতঘর ও লতিফপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ, নোয়াগাঁও গ্রামের ওহাবা বেগম, তেতৈয়া সোহরাব হোসেন মেম্বার, কাউছার আলম, জলা তেতৈয়া অরুণ বৈদ্যের দোকান ঘর এবং সিংড্ডা, খিড্ডা, সদর দক্ষিণ ইউনিয়নের ধলি কচুয়া, কোমরকাশা, রাজাপুর গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে যাওয়ায় তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। শুধু তাই নয়, ফল গাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ওই গ্রামের বিধবা জিলহজ বেগম বলেন, “হঠাৎ পশ্চিম দিক থেকে শো শো শব্দ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার বসতঘর উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমার স্বামী ও কোনো ছেলে সন্তান নেই।
“আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ভিক্ষা করে রাস্তার পাশে ছোট ঘরটা করেছিলাম। ঝড়ে আমার সবকিছু নিয়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি।”
একই উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের সোহরাব হোসেন বলেন, রাতে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, তবে কিছুক্ষণের মধ্যে তা থেমে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, আমার খামারের ঘর ভেঙে পুকুরে পড়ে অনেক মুরগী মারা গেছে। এতে প্রায় চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
কচুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম বেলায়াত হোসেন বলেন, ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। দ্রুত সংযোগ দিতে কাজ চলছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কত গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
কচুয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “ঝড়ে ভূট্টা ও বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছেন।”
ইউএনও ইকবাল হাসান বলেন, “ঝড়ে দুটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে ইউপি সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী সহযোগিতা করা হবে।”