সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার রায়ের জন্য ৫ এপ্রিল দিন রেখেছে আদালত।
মঙ্গলবার সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মাদ নুরুল আমীন বিপ্লবের আদালত উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদেশের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু।
তিনি জানান, এ মামলায় ৩৩ সাক্ষীর মধ্যে ২১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে সক্ষম হয়েছে।
এ সময় আদালতে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিন সদস্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারি এলাকার জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), তার স্ত্রী মোছা. আর্জিনা ওরফে রাজিয়া সুলতানা (২১) এবং মো. হাসান (২৮) আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির পর মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোরে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর চার দিন ওই বাড়ি ঘিরে চলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’। ২৮ মার্চ অভিযান শেষে ওই বাড়ির ভেতরে চারজনের লাশ পাওয়া যায়।
অভিযান চলাকালে আতিয়া মহল থেকে একটু দূরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট সাতজন নিহত হন।
সেসময় র্যাব জানিয়েছিল, প্রচুর বিস্ফোরক থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে র্যাব বেশ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করে। তাই একটু সময় বেশি লাগে। পরে তারা পুলিশকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়। এ অভিযান এক নারী ও তিন পুরুষ নিহত হন। ময়নাতদন্ত শেষে চারজনকে সিলেটের হযরত মানিকপীর গোরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় এসআই সুহেল আহমদ সিলেটর নগর পুলিশের মোগলাবাজার থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। কমান্ডো অভিযানের সময় আত্মাঘাতী বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘নব্য জেএমবির’ তিন সমস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই।
২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়। এতে জহুরুল হক, তার স্ত্রী আর্জিনা বেগম ও মো. হাসানকে অভিযুক্ত করা হয়।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ২০১৭ সালে পৃথক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনাকে এবং কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদেরকে আতিয়া মহলের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: