এ বছর জেলায় ৩৪ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
Published : 07 Dec 2023, 09:00 PM
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে একদিনের টানা বৃষ্টিতে পানি জমায় আলু উৎপাদনে প্রসিদ্ধ মুন্সিগঞ্জের কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা বৃষ্টিতে সদ্য রোপণ করা বীজ আলু পচে গিয়ে কোটি টাকা লোকসানের শঙ্কায় আছেন চাষিরা। এখন শেষ রক্ষার চেষ্টা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার জেলায় ১২ ঘণ্টায় ৩১ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদ্প্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কল্যাণ কুমার সরকার।
তিনি বলেন, “অবিরাম বর্ষণে জেলার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে গেছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি, তারা যেন যত দ্রুত জমির পানি নিষ্কাশন করেন।
“বৃষ্টি যদি এমন করেই চলতে থাকে আমরা আশঙ্কা করছি কিছু ফসলের ক্ষতি হতে পারে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হবে, বৃষ্টি শেষ হবার পরে জানা যাবে।”
কল্যাণ কুমার জানান, মুন্সিগঞ্জে আলু আবাদ শুরু হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে। এ বছর জেলায় ৩৪ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১৬ হাজার দুইশ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে।
অসময়ে বৃষ্টির ক্ষতি কমিয়ে আনতে ড্রেন করে পানি সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল আজিজ।
তিনি বলেন, “কৃষকের ক্ষতি কমিয়ে আনতে, ড্রেন করে জমির পানি দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। বৃষ্টির পানিতে সার এবং বীজ ভেসে গেছে। তবে আমাদের পর্যাপ্ত সার ও বীজ আছে। আমরা ডিলারদের দোকানে দেখেছি সার রাখার জায়গা নেই।”
সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের লতব্দী গ্রামের আলু চাষি আশ্রাফ হোসেন ঝন্টু বলেন, “এ বছর আমি এরই মধ্যে ১০০ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করে ফেলেছি। কিন্তু বৃষ্টিতে আমার সব আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধারণা করছি, আমার প্রায় ৪০ লাখের বেশি টাকার ক্ষতি হবে। তবে বড় সমস্যা হচ্ছে বৃষ্টি শেষে আবারও রোপণ করতে হবে। কীভাবে করব, সেই চিন্তায় আছি।”
খিদিরপুর গ্রামের চাাষি মো. রুহুল আমিন বলেন, “এ বছর টার্গেট ছিল ১২০ বিঘা আলু রোপণ করব। এরই মধ্যে ৯০ বিঘা রোপণ শেষও করেছিলাম। শ্রমিক সার, বীজসহ রোপণ করতে প্রতিবিঘা আমার খরচ পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা।”
“বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পানিতে আমার সব জমিই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। লাভের আশায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার এনে আলু চাষ করেছিলাম, বৃষ্টি আমার সব কিছু শেষ করে দিল।”
কেয়াইন ইউনিয়নের চাষি মো. আওলাদ খান বলেন, “এ বছর দুই বিঘা আলু লাগিয়ে ছিলাম সব এখন পানির নিচে। প্রায় ৯০ হাজার টাকা লোকসানের মুখে পড়লাম ।”