সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবসে নানা আয়োজন পাবনায়

সূচিত্রা সেনের আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার তার মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2023, 06:38 PM
Updated : 17 Jan 2023, 06:38 PM

পর্দায় যার উপস্থিতি আবহমান বাঙালি নারীর কথা মনে করিয়ে দেয় ভক্তদের কাছে তিনি মহানায়িকা। তার কথা বলার ঢং, চুলের সুবিন্যাস, চোখের চাহনি, নানা সাজে শাড়ি পরা, হাসি, চলাফেরা সবই মুগ্ধ করেছে সিনেমা দর্শকদের। 

তিনি মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। ১৭ জানুয়ারি তার নবম মৃত্যুবার্ষিকী। 

সকাল ১০টায় সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়িতে তার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সংগ্রহশালা প্রাঙ্গণে স্মরণসভা ও সুচিত্রা সেন অভিনীত চলচ্চিত্রের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। 

এ ছাড়া পাবনায় তার শৈশব-কৈশরের স্মৃতিবিজড়িত পৈতৃক ভূমি সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালায় স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। 

স্মরণসভায় বক্তারা তার অভিনয়ের নানা দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। তারা এ স্মৃতি সংগ্রহশালাকে আরও সমৃদ্ধ করার দাবিও জানান। 

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রামদুলাল ভৌমকের সভাপতিত্বে আসাদ বাবুর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগের ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার মনোজ কুমার। 

আরও বক্তব্য দেন ভারতীয় হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব দীপক কুমার কাউলা, অধ্যাপক কামরুজ্জামান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান ও পৌরসভার মেয়র শরীফ শরীফ উদ্দিন প্রধান। 

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, “মহানায়িকা সুচিত্রা সেন পাবনা তথা দেশের গর্ব। আমরা তাকে হৃদয়ে লালন করি। মহানায়িকার মৃত্যু নেই। তিনি সব সময় বাঙালির হৃদয়ে থাকবেন। তাই তার স্মৃতিচারণ করতেই আমাদের এই আয়োজন।”

১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের পৈতৃক বাড়িতে সুচিত্রা সেন জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকৌশলী দিবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি কলকাতায় চলে যান। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি তিনি ভারতের কলকাতায় একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি শেষ জীবন কাটিয়েছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। 

সুচিত্রা সেনের মা ইন্দিরা দেবী গৃহবধূ ও বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক ছিলেন। ১৯৬০ সালে তারা পাবনার বাড়িটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে সপরিবারে কলকাতায় চলে যান। ১৯৮৭ সালে জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্ট বাড়িটি ইজারা নেয়। 

২০০৯ সালে পাবনাবাসী বাড়িটি দখলমুক্ত করে সুচিত্রা সেন সংগ্রহশালা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই দখলমুক্ত করে জেলা প্রশাসন বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করে। বাড়িটি উদ্ধারের পর থেকেই পাবনার স্বাংস্কৃতিক কর্মীরা একটি ফিল্ম ইনস্টিটিউট করার দাবি জানিয়ে আসছেন।