নাটোরে দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১৫, আটক ৯

সিংড়ার আনোয়ার হোসেন ও সাইফুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

নাটোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 11:01 AM
Updated : 3 Dec 2022, 11:01 AM

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

শনিবার সকালে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের চলনবিলের দুর্গম এলাকা বেড়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনায় নয়জনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন সিংড়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০১৬ সালে বেড়াবাড়ি গ্রামে রেজাউল নামে একজনকে হত্যা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেনের দায়ের করা হত্যা মামলায় সাইফুল ইসলামকে আসামি করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আনোয়ার ও সাইফুলের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়েছে। শনিবার দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় দুপক্ষের হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলিতে অন্তত ২০ জন আহত হয়। এর মধ্যে ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

আহতদের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে আ. মান্নান হাজী (৫৫), সেহাব উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম তালুকদার (৭০),  আক্কাস আলীর ছেলে শামীম হোসেন (৩০) ও সবুজ হোসেন (৩৫), রফিকুল ইসলাম খন্দকারের ছেলে  মো. নয়ন  হোসেন (২৫),  রহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রউফ (৩০), বিপ্লবের ছেলে দীপন (৩২), অফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. শুভ (২৪), মো. আমানত হোসেনের ছেলে  মো. সাইদুল ইসলাম (৩০), আব্দুল জলিলের ছেলে মো. মুনসুর (৪৫), মো. সাগের উদ্দিনের ছেলে মো. বাবু (৪৫), বাপ্পী তালুকদারের স্ত্রী শিরিনা বেগম  (৩৫), মো. সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম (৩০), মেছের আলী তালুকদারের ছেলে মোজাম্মেল হক (৫০), মো. জয়নাল (৫০), সেন্টু মোল্লা (২৮), শুভ মোল্লা (২৭), হেলাল (২৮)। 

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মঈনুল হক রিকো সাংবাদিকদের বলেন, আহতদের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া ও রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়েছে। অন্যদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

বেড়াবেড়ি গ্রামের নিহত রেজাউলের স্ত্রী মনিরা বেগম অভিযোগ করেন, “শনিবার সকালে আমার স্বামীর হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি সাইফুলের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিতে হামলা চালায়।”

তবে এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও সাইফুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল মজিদ মামুন গোলাগুলির কথা উল্লেখ করে বলেন, “বেড়াবাড়ি গ্রামে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে। আমরা বার বার চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি। প্রশাসনের কাছে আবেদন, এলাকায় শান্তি ফেরাতে তারা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।“

সিংড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত রয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা উভয়পক্ষের নয়জনকে আটক করেছি। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”