প্রক্টরিয়াল বডির তত্ত্বাবধানে গ্রামের বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ওই ছাত্রী।
Published : 22 Feb 2023, 05:58 PM
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রলীগ নেত্রীদের হাতে নির্যাতনের শিকার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এসে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সামনে বক্তব্য দিয়েছেন।
বুধবার প্রক্টরিয়াল বডির তত্ত্বাবধানে গ্রামের বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ওই ছাত্রী। পরে তাকে তদন্ত কমিটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান সহকারী প্রক্টর জয়শ্রী সেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বেলা সাড়ে ১১টায় আমরা ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট থেকে রিসিভ করে তদন্ত কমিটির কাছে নিয়ে যাই।”
ওই শিক্ষার্থীর আবাসিক হল দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের শাখা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, “বুধবার হলের মধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। দুপুর ২টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাত করতে তাকে হল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।”
কমিটির কাছে বক্তব্য উপস্থাপন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকে ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, নিজের হাতে লেখা ১৩ পৃষ্টায় নির্যাতনের বর্ণনা তিনি কমিটির কাছে দিয়েছেন। এ ছাড়া দুটি তদন্ত কমিটিই কিছু বিষয় জানতে চেয়েছে।
তবে দুই দিন ধরে কাজ চালালেও এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল শাখার সহসভাপতি তাবাস্সুম ইসলাম মীমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত র্যাগিং এর নামে একটি কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ‘বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ’ করা হয় বলে এক ছাত্রী অভিযোগ করেন।
এরপর ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল কর্তৃপক্ষ দুটি কমিটি গঠন করে। এসব কমিটির কাজ চলমান রয়েছে।
তার মধ্যেই হাই কোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ ন ম আবুজর গিফারি, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাহমুদা সুলতানা এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহাবুব আলম।
নির্যাতনের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী তার গ্রামের বাড়ি পাবনায় চলে যান। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ডাকে তিনি দুইবার এসে তদন্ত কমিটির কাছে নির্যাতনের বক্তব্য দেন। বুধবার তিনি তৃতীয়বারের মতো এলেন।
বিএনপিপন্থিদের মানববন্ধন
এদিকে ছাত্রী নির্যাতনের প্রতিবাদ ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল এবং জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফোরাম।
দুপুর সাড়ে ১২টায় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক এম এম শরিফুল বারী বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন: হাই কোর্টের আদেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি
ইবি হলে ছাত্রী নির্যাতন: তদন্ত কমিটির মুখোমুখি ছাত্রলীগের দুই নেত্রী
তদন্ত কমিটিকে ‘নির্যাতনের’ বর্ণনা দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
ইবির হলে ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে
ইবি হলে ছাত্রী নির্যাতন: ভুক্তভোগীর বক্তব্য শুনবে হল কর্তৃপক্ষ