সিলেটে শিশুকে হত্যার দায়ে চাচির যাবজ্জীবন

সায়েল ভোরে আম কুড়াতে গিয়ে চাচিকে তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখে ফেলায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানান পিপি। 

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমসমগ্র
Published : 28 May 2023, 02:09 PM
Updated : 28 May 2023, 02:09 PM

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় দেবরের ছেলেকে হত্যার অপরাধে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। 

রোববার সিলেটের জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. নিজাম উদ্দিন।
দণ্ডিত সুরমা বেগম (৪১) বিয়ানীবাজার উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের বাসিন্দা। 

মামলার বরাত দিয়ে পিপি নিজাম উদ্দিন বলেন, ২০২০ সালের ৭ জুন ভোরে উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের খসরু মিয়ার পাঁচ বছরের ছেলে আরিফ আহমদ ও সাড়ে তিন বছরের সায়েল আহমদ আম কুড়াতে যায়। সেখানে সায়েল আহমদ তার চাচি সুরমাকে প্রেমিকের সঙ্গে দেখে ফেলে।    

সায়েল সবাইকে বলে দেবে ভয়ে সুরমা প্রমাণ না রাখতে শিশুটিকে হত্যার পর মরদেহ গুম করতে ঘরের শৌচাগারের প্লাস্টিকের ড্রামে কম্বল দিয়ে মুড়ে রেখে দেন। 

তিনি বলেন, ওই দিন সকাল ৭টার দিকে আরিফ ফিরলেও সায়েল ঘরে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে সুরমাকে সায়েলের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তার কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হয়। এক পর্যায়ে সুরমা বেগমের ঘরের শৌচাগারের প্লাস্টিকের ড্রাম থেকে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় সায়েলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ সুরমাকে গ্রেপ্তার করে। 

আইনজীবী আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুরমা পুলিশকে জানান, তাদের সম্পর্কের বিষয় সবার কাছে বলে দেওয়ার কথা বলায় ভয়ে সায়েলকে হত্যা করেন। 

এ ঘটনায় সায়েলের বাবা ২০২০ সালের ৮ জুন সুরমা বেগম, তার স্বামী রুনু মিয়া ও প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা করেন। 

পিপি বলেন, মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন। ২০২২ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেয়। 

নিজাম উদ্দিন বলেন, রায়ে আদালত সায়েলের চাচা রুনু মিয়া ও ‍সুরমার প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ইব্রাহিমকে খালাস দেয়। অন্যদিকে সুরমাকে যাবজ্জীবন এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া লাশ গুমের দায়ে সুরমাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

আদালত উভয় সাজা একত্রে চলার নির্দেশ দেয় বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী।