সাক্ষী অনুপস্থিত, কিবরিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্যের নতুন তারিখ

কিবরিয়া হত্যা ও সুরঞ্জিত হত্যাচেষ্টা মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ আগামী ১৫ জানুয়ারি।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2022, 03:03 PM
Updated : 6 Dec 2022, 03:03 PM

সাক্ষী উপস্থিত না থাকায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলা ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। 

সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল জানান, মঙ্গলবার এই দুই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য তারিখ ছিল। সাক্ষীরা উপস্থিত না থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। 

এ দুই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ আগামী ১৫ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল জানান, মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জিকে গৌছসহ ৯ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উচ্চ আাদালতের নির্দেশে সাবেক স্বারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে উপস্থিত না করার নির্দেশনা রয়েছে। আর পাঁচ আসামি জামিনে থেকে সময় প্রার্থনা করে দরখাস্ত দিয়েছেন। 

২০০৫ সালর ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচ জন। 

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তিন দফায় তদন্ত করে সিআইডি। ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ প্রথম দফায় শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন বাদী মজিদ খান। 

২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আবার সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ২০১১ সালের ২০ জুন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামি করে অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। 

ওই বছরের ২৮ জুন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া এই অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি আবেদন করেন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর সিআইডি সিলেট রেঞ্জের জ্যেষ্ঠ এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। 

মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, মোহাম্মদ আলী, বদরুল ওরফে মো. বদরুল, মাওলানা তাজ উদ্দিন ও মো. মুহিবুর রহমান। 

আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ প্রকাশ নিমু, বদরুল আলম মিজান, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, মুহিবুল্লাহ ওরফে মুজিবুর রহমান প্রকাশ অভি, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম। 

এ ছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ সহ ১২ জন জামিনে রয়েছেন। 

এদিকে, ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। 

তখন বোমা হামলায় এক যুবলীগ কর্মী নিহত ও ২৯ জন আহত হন। 

এ ঘটনায় এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগ গঠন করা হয়। 

পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল জানান, কিবরিয়া হত্যা মামলায় ১৭১ জনের মধ্যে ৪৭ জন এবং গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলার ১৯৮ জনের মধ্যে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলার ১২৩ জনের মধ্যে ৩ জন এবং বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলার ১২৩ জনের মধ্যে ৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আরও পড়ুন:

কিবরিয়া হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট  
সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলায় চারজনের সাক্ষ্য  
কিবরিয়া হত্যা: বাবর, হারিছ ও আরিফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন  
কিবরিয়া হত্যা মামলা: আরিফুল ফের কারাগারে