নীলফামারীর ডেমার উপজেলায় নিয়ম ভেঙে একটি বিদ্যালয়ের গাছ কেটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ডোমার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, গত শনিবার রাতে অর্জুন গাছটি কাটা হয়। অনেক বড় এই গাছের আনুমানিক বাজার মূল্য তিন লাখ টাকার বেশি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, গাছ কাটার বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানতেন না। গাছটি কাটার ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিও নেওয়া হয়নি। শনিবার বিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাছটি কেটে খণ্ড খণ্ড করে বিক্রি করা হয়।
কমিটির সদস্য আব্দুস ছালাম বলেন, “শনিবার আমি একজন অভিভাবকের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মাগরিবের নামাজের পর বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের উপস্থিতিতে অর্জুন গাছটি কাটা হচ্ছিল। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে বলেন- বিদ্যালয়ের সভাপতি তাকে অনুমতি দিয়েছেন, তাই তিনি গাছ কাটার জন্য লোক লাগিয়েছিলেন।”
আব্দুস ছালাম আরও জানান, বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়ে কোনো সভা বা রেজুলেশন করা হয়নি। এমনকি মৌখিকভাবেও জানানো হয়নি কমিটির কোনো সদস্যকে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম বলেন, “ওই গাছ কাটার বিষয়ে আমাকে লিখিত বা মৌখিক ভাবে জানানো হয়নি।”
বিদ্যালয়ের গাছ কাটার একটি নিয়ম রয়েছে উল্লেখ করে শাকেরিনা বেগম বলেন বলেন, “বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে হলে কারণ উল্লেখসহ ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন দাখিল করতে হবে। এখানে একটি কমিটি আছে ওই কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে গাছ কাটা যাবে। কমিটির সদস্য স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা এবং সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডোমার বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, “কোনো প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে প্রথমে বন বিভাগকে অবগত করে গাছটি মেপে মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করতে হবে। ডোমার বালিকা নিকেতনের গাছ কাটার ব্যাপারে আমাকে অবগত করা হয়নি।”
গাছ কাটার বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিদ্যালয়ের সভাপতি এ বিষয়ে অবগত আছেন। এ বিষয়ে মিটিং, রেজুলেশন পরে হবে।”
ওই বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডোমার পৌরসভার মেয়র মো. মনছুরুল ইসলাম দানু। গাছ কাটার বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের স্কুলের প্রয়োজনে আমরা গাছটি কেটেছি; মিটিং, রেজুলেশন হয়নি। তবে কমিটির সবাইকে বলা আছে। আর স্কুলের গাছের আমরাই মালিক। এগুলো নিয়ে তোমরা কী নিউজ করতে চাও করো।”
গাছ কাটার বিষয়ে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ কোনো আবেদন করেছেন কিনা জানতে চাইলে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. পূবন আখতার বলেন, “বিষয়টি আমার মনে পড়ছে না, খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।”