ফেইসবুকে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর ২০১৭ সালে রংপুরের টিটু রায়ের বাড়িসহ হিন্দুপাড়ায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
Published : 24 May 2023, 07:20 PM
মহানবীকে কটূক্তি করায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় রংপুরের সেই টিটু রায়ের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
মঙ্গলবার রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মজিদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রুহুল আমিন তালুকদার।
দণ্ডিত টিটু রায় (৩৫) রংপুরের গঙ্গচড়া থানাধীন হরকলি ঠাকুরপাড়ার বাসিন্দা।
মামলার বরাত দিয়ে পিপি রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, “নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বসে ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর ‘এমডি টিটু’ নামের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়া হয়।
ওই স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর ওই বছরের ১০ নভেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের পর টিটু রায়ের শাস্তির দাবিতে শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয় জনতা।
আইনজীবী বলেন, পরে কয়েক হাজার মানুষ রংপুরের ঠাঁকুরপাড়ার টিটু রায়ের বাড়িসহ হিন্দুপাড়ায় অগ্নিসংযোগ করে। এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশসহ ১৫ জন।
ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে এবং বাড়িঘরে হামলা ও একজন নিহতের ঘটনায় সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়।
পিপি রুহুল আমিন তালুকদার জানান, গঙ্গাচড়া থানায় করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় টিটু রায়কে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আসামির আইনজীবী প্রশান্ত কুমার রায় সাংবাদিকদের বলেন, “সাইবার ট্রাইবুনালে ফরেনসিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রায় প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু টিটুর মোবাইল ডিভাইসে ওই ধরনের বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ার প্রমাণ মেলেনি ফরেনসিক প্রতিবেদনে।
“নিরক্ষর একটি ছেলের পক্ষে ফেক আইডি খুলে এই রকম পোস্ট প্রচার করা সম্ভব নয়। বিচারক রায় দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর গঙ্গাচড়া থানায় টিটুর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন পাশের লালচাঁদপুর গ্রামের মুদি দোকানি রাজু আহমেদ।
এরপর ১০ নভেম্বর ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে কয়েক হাজার মানুষ ঠাকুরপাড়ায় হামলা চালায়। তারা নয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক হামলাকারী নিহত এবং সাত পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়।
আরও পড়ুন: