“রোগীর চাপ কিছুটা বেশি হলেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি; পযার্প্ত ওষুধও আমাদের রয়েছে। তবে গরমে মানুষকে চলাফেরায় আরেকটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন।“
Published : 23 Apr 2024, 05:55 PM
প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে ময়মনসিংহের হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ। এ অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও সূর্যকান্ত হাসপাতালে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এই গরমে চলাফেলায় সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সুস্থ থাকতে তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ঠাণ্ডা, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন ১২০ জনের মতো শিশু। ৬০ শয্যার ওয়ার্ডে প্রায় চারশতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অপরদিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সূর্যকান্ত (এসকে) হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অতিরিক্ত চাপ বাড়ায় মেঝে ও বারান্দায় শুয়ে সেবা নিতে হচ্ছে রোগীদের। আর চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীর চাপ সামলিয়ে সাধ্যমত সেবা দিচ্ছেন তারা।
সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার দুই বছরের মেয়ে তানিয়া তাসনিমকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন মুক্তাগাছার তাহের উদ্দিন ও আফরোজা আক্তার দম্পত্তি।
তাদের উদ্দিন বলছিলেন, “অতিরিক্ত গরমের মধ্যে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বাচ্চাটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে সেবা পেলেও অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে মেঝেতে শুয়ে সেবা নিতে হচ্ছে।“
সূর্যকান্ত হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সেবা নিচ্ছেন। সেখানে কথা হয় ব্যাংক কর্মকতা শফিকুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে।
শফিকুল বলেন, “গত শনিবার থেকে পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। বাসায় স্যালাইন খেয়েছি; তবে সোমবার সকালে হঠাৎ করে শরীর বেশী খারাপ হওয়ায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসকরা স্যালাইন দেওয়ায় এখন কিছুটা সুস্থ লাগছে।“
গরমে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা রোগির চাপ বেড়েছে বলে সূর্যকান্ত হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. প্রজ্ঞানন্দ নাথ জানান।
তিনি বলেন, “গত মার্চে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৬০৫ জন রোগী সেবা নিয়েছে; চলতি মাসে সেবা নিয়েছে ৬৫৫ জন। তার মানে বলা যায় স্বাভাবিকের চেয়ে গরমে বেশী রোগী সেবা নিচ্ছেন।
“রোগীর চাপ কিছুটা বেশি হলেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি; পযার্প্ত ওষুধও আমাদের রয়েছে। তবে গরমে মানুষকে চলাফেরায় আরেকটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন।“
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত গরমে শ্বাসকষ্ট, সর্দি, ঠাণ্ডা এবং নিউমোনিয়ায় সবচেয়ে বেশী শিশুরা আক্তান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন শতাধিকের ওপরে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ৬০ বেডের জায়গায় ভর্তি রয়েছে ৩৭৪ জর রোগী।
“ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝে এবং বারান্দায় সেবা দেয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকট থাকা সত্বেও আমরা সাধ্য অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করছি।”
তিনি বলেন, অভিভাবকের কাছে পরামর্শ থাকবে যেহেতু অতিরিক্ত গরম পড়েছে তাই বাচ্চাদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। শিশুদের তরল জাতীয় খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি সারাক্ষণ সুরক্ষায় রাখতে হবে।