নৌকায় ভোট না দিলে হাত কেটে ফেলার হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী ইস্কান্দার।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকায় ভোট না দিলে ‘হাত কেটে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা।

মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের ইরতা গ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কর্মীদের এই হুমকি দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলী ইস্কান্দার।

এই আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।

১৯৯৬ সালে আলী ইস্কান্দারের ভাই ডা. আলী জিলকদ আহমেদ এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকার প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তিনি পরাজিত হন।

আলী ইস্কান্দার ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।

ঘটনার সময় উপস্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী রাহুল খান ইমু সাংবাদিকদের বলেন, বিকাল ৪টার দিকে আব্দুর রাজ্জাক, মিনহাজ, আমিনুর, শাহিনুরসহ বেশ কয়েকজন কর্মী ইরতা এলাকায় প্রচারপত্র বিলি করে ভোটারদের কাছে ট্রাক মার্কায় ভোট চাইছিলেন।

“এ সময় একটি প্রাইভেট কার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন আলী ইস্কান্দার। তিনি নৌকায় ভোট না দিলে আমাদের হাত কেটে নেওয়া, জেলে ঢুকানোর হুমকি-ধামকি ও অকথ্য ভাষায় গালি দেন”, বলেন ইমু।

এ সময় ট্রাক প্রতীকের এক কর্মী সেই হুমকির দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায় আলী ইস্কান্দার গ্রামের একটি মাটির রাস্তায় কয়েকজনকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার পরনে ছিল জিন্সের প্যান্ট, জামা ও ব্লেজার। ডান হাতে রোদ চশমা। আশপাশে মানুষের বাড়িঘর রয়েছে।

তিনি উচ্চস্বরে বলছেন, “ডা. জিলকদ নমিনেশন নিয়া আসছিল। জিলকত ভাইকে ভোট দেয় নাই। এবার আমার দেখার আছে। আমি তো ভেতরে থাকব। নৌকাকে ভোট না দেয়, হাত কাইটা ফালামু।

“আমি ইস্কান্দার। জিলকদের ভাই আমি। জিলকদকে ভোট দেয় নাই। (বুক দেখিয়ে) এখানে ঘাঁ। হাত কাইটা ফালামু। রেডি থাইকো। সাহস থাকে পাল্লা লইবা আমার লগে। কোন… পোলা আছে আমার অ্যাগেইনস্টে যাবে।

“লজ্জা করে না তোমাদের। দেখার আছে আমার। খোদার কসম দেখার আছে। এইবার চৌদ্দ শিকে ঢুকাইয়া ছাইরা দিমু। সরকার আমার, পাওয়ার আমার, প্রশাসন আমার, এমপি আমার। যাইও ভোট দিবার, যাইও ট্রাক মার্কায়, ট্রাকের চাকার তলে ফালাই দিমু… বাচ্চারে।

“ফাজলামো পাইছ একেকটা। কাউকে কিছু বলি না দেইখা। হাড্ডি-মাংস এক কইরা ফালামু। প্রত্যেকটাকে গুলি করবো।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলী ইস্কান্দার সাংবাদিকদের বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা টাকা ও চকলেট বিতরণ করছে খবর শুনে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমার ভাই ডা. জিলকদ একসময় নৌকার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেছিলো। কিন্তু তারা ভোট দেয়নি।

“এ কারণে মনে অনেক কষ্ট। উত্তেজিত হয়ে তাদের অনেক কথা বলেছি। আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি নাই। এরকম আমার আগে কখনো হয়নি”, বলেন আওয়ামী লীগ নেতা।