জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে রাজমিস্ত্রিকে মারধরের ঘটনায় ভয়ে দুই দিন ধরে কাজ করতে আসছে না নির্মাণ শ্রমিকরা।
১০ জানুয়ারি বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনি হলের এ ব্লকে সংস্কার করা একটি জানালার কাঁচ ভেঙে পড়লে ওই মিস্ত্রিকে মারধর করা হয় বলে জানান সংস্কার কাজের ঠিকাদার মো. জামাল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মঙ্গলবার বিকালে জানালার একটি কাঁচ ভেঙে পড়লে আল বেরুনি হলের কয়েকজন সেখানে আসে। তাদের মধ্যে একজন মাহতাব নামের মিস্ত্রিকে মারধর করে। এরপর থেকে মিস্ত্রিরা আর কাজে আসছে না।”
“জানালায় পুডিং লাগানো হয়েছিলো, কিন্তু পুডিং ঠিকমতো শুকায়নি, যার ফলে কাঁচ ভেঙে পড়েছিলো। পুডিং শুকানোর আগে জানালা রাফ ব্যবহার করলে তো কাঁচ ভাঙাটা স্বাভাবিক।”
মিস্ত্রিকে মারধরের পরে কী হয়েছিল জানতে চাইলে জামাল বলেন, “শ্রমিকরা যেন কিছু মনে না করে এবং 'এটি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল' এরকম একটি মীমাংসা করে দেয় হলের এনাম (এনামুর রহমান) ভাই। মীমাংসা করে দিলে তো আর কিছু বলার নাই। আর হলের ছাত্রদের তো শ্রমিকরা এমনিই ভয় পায়।”
কে মারধর করেছে তার নাম বলতে না পারলেও তিনি যে হলের ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন এটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন জামাল।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রলীগ নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ছাত্রলীগের কয়েকজন সেখানে উপস্থিত থাকলেও মিস্ত্রিকে মারধর করেন পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগের জোবায়েদ আশিক।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুর রহমানের কাছে মীমাংসা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।”
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রলীগের কেউ যদি কোনও শ্রমিককে মারধর করে থাকে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।”
আল বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংস্কার কাজটা মূলত প্রজেক্ট অফিস দেখছে। তারপরও আমি হলে খোঁজ-খবর নিয়েছি কাউকে মারধর করা হয়েছে কিনা, কিন্তু কেউ জানে না। এখন পর্যন্ত কোনও প্রকার অভিযোগ আসেনি।”
হলের সংস্কার কাজের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ওপর ন্যস্ত।
পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী ফাহমিদা মাসউদ বলেন, “হলের সংস্কার কাজগুলো আমরাই দেখছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে শ্রমিকরা দুই দিন ধরে কাজে আসছেন না।”
তবে শুক্রবার থেকে শ্রমিকরা কাজ ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।