চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খুলনা কারাগারে

গত রোববার চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2022, 03:54 PM
Updated : 21 Sept 2022, 03:54 PM

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ গাজীকে খুলনা কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

প্রতারণা মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার ১১ বছর পর গতকাল মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে খুলনা কারাগারের কারাধ্যক্ষ মো. তারিকুল ইসলাম জানান।

তিনি জানান, দণ্ডবিধির ৪২০ ধারার একটি মামলায় খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম ইউসুফ গাজীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত রোববার চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

ওই দিনই এক ই-মেইল বার্তায় মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছিলেন ইউসুফ গাজী।

তিনি বলেছিলেন, “আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা পরিষদ নির্বাচন- ২০২২ এ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করি। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এর বিরুদ্ধে আমি আপিল করব এবং আশা করি, ন্যায় বিচার পাব- ইনশাআল্লাহ।”

ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে বুধবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) বরাবর আপিল হয়েছে বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ জানান।

এর আগে ইউসুফ গাজীর প্রার্থী হওয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন সদ্য পদত্যাগ করা চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ওসমান গনি পাটওয়ারী।

ওসমান গনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, যেহেতু ইউসুফ গাজী আদালতের রায় অনুযায়ী আত্মসমর্পণ না করে পলাতক থাকেন এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির মাধ্যমে সাজা পরোয়ানা জারি করতে দেননি, তাই তিনি বর্তমানে আইনের চোখে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে চিহ্নিত।

ওসমান গনি আরও উল্লেখ করেন, জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ৬(২)ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধের কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূনতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।’ এ অবস্থায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলযোগ্য ও তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য।

জানা যায়, দিয়াশলাই ফ্যাক্টরিতে কাঠ সরবরাহের যৌথ ব্যবসার প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন স্থানীয় হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি।

ওই মামলায় আদালত আসামিকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আপিল শুনানি শেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, যা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, এ রায় তিনি গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে। সেই সঙ্গে আসামিকে ৩০ দিনের মধ্যে সাজা ভোগের জন্য খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:

Also Read: জেলা পরিষদ: চাঁদপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল