গত সেপ্টেম্বর মাসেও বেশ কয়েকদিন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ করে বেতন আদায় করেন ওই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা।
Published : 19 Oct 2024, 04:39 PM
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সারাবো এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকরা।
পরে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী বেতন আদায় করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছেন গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম।
আন্দোলনকরা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের বরাতে জানা যায়, সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ২২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতন দিতে হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা।
গত সেপ্টেম্বর মাসেও বেশ কয়েকদিন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ করে বেতন আদায় করেন ওই কারখানার শ্রমিকরা। চলতি মাসেও একই অবস্থা শুরু হলে শ্রমিকরা কয়েকদিন আগে বিক্ষোভ করেন।
পরে গত সপ্তাহে ২৭ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও অনেক শ্রমিক বেতন পায়নি।
এই বকেয়া বেতনের দাবিতে এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক শনিবার সকাল ৮টা থেকে চক্রবর্তী এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নেন।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তারা বেতন আদায় করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, “মাসের ১৯-২০ দিন চলে গেলেও বেতন পাচ্ছি না। বেতন না পাওয়ায় ঘর ভাড়া, দোকানের বাকি সেগুলি পরিশোধ করতে পারছি না। গত মাসেও আন্দোলন করে বেতন নিতে হয়েছে। প্রতিমাসে এই অবস্থা হলে আমাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে।”
প্রায় এক যুগ ধরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে কাজ করা শরিফুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের কথা দিয়েছে তারা বেতন আদায় করে দিবেন। পরে আমরা সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছি।”
এদিকে সড়ক অবরোধে দুর্ভোগে পড়েন চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে চলাচলকারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, “অল্প কিছুতেই সড়ক অবরোধ করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলা হচ্ছে। শ্রমিকদের সমস্যা তারা কারখানায় গিয়ে আন্দোলন করুক রাস্তায় কেন আসে?”
বাস চালক রহিম সরকার বলেন, “শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হতেই এখন ভয় করে। ভাঙচুর না হলেও দীর্ঘ সময় বসে থেকে সময়ও নষ্ট হয়, যাত্রীদের কষ্ট হয়, আবার তেল ফুরাচ্ছে।”
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, ওই কারখানায় ২৭ কোটি টাকার মতো বেতন দেওয়া হয়েছে। বেতনের বাকি টাকাও দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তাদের বলা হয়েছে।
শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে অল্প সময় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে এখন স্বাভাবিক রয়েছে।