বিষয়টি তদন্তে কমিটি করার কথা বলেছন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আরএমও।
Published : 04 Mar 2025, 08:32 PM
পাবনায় স্বাভাবিক প্রসবে এক নারী মৃত শিশুর জন্ম দিয়েছেন; প্রথমে যেটির শুধু দেহ বেড়িয়ে আসে। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতির পেট থেকে মাথাটি বের করে আনেন চিকিৎসক।
প্রসূতি পাবনার আতাইকুলা থানার চক বাইস্যা গ্রামের বাসিন্দা রমজান খাঁর স্ত্রী শিউলী খাতুন (৩৫) এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার সকালের দিকে এ ঘটনার পর বিষয়টি তদন্তে কমিটি করার কথা বলেছেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জাহিদুল ইসলাম।
ভুক্তভোগীর স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাতে শিউলি খাতুনের প্রচণ্ড প্রসব বেদনা শুরু হলে বাড়িতেই স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করা হয়। তবে এতে তারা ব্যর্থ হন। সকালে নিয়মিত চিকিৎসক শাহিন ফেরদৌস শানুর কাছে নিলে তিনি দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।
এরপর সকাল ৮টায় শিউলীকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় তার স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন নার্স ও চিকিৎসকরা। একপর্যায়ে নবজাতকের মাথা বাদ দিয়ে দেহের বাকি অংশ বেরিয়ে আসে।
নবজাতকের মাথা ছিঁড়ে মাতৃগর্ভে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নার্স, চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনরা। এরপর দ্রুত অস্ত্রোপচার করে ভেতরে থেকে যাওয়া মাথাটি বের করে আনেন চিকিৎসক।
এ ব্যাপারে শিউলী খাতুনের মেয়েজামাই ফরমান আলী বলেন, “শুরুতেই ডাক্তার বলেছেন, বাচ্চা পেটেই মরে রয়েছে। আমরা তেমন কিছু বুঝি না। তবে আমাদেরও তাই মনে হয়েছে। ডাক্তারের কথাও বিশ্বাস করেছি।
“এ নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা এখন রোগীর সুস্থতা নিয়ে চিন্তায় আছি।”
হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক নার্গিস সুলতানা বলেন, “রোগীর মেডিকেল রিপোর্ট এবং অন্যান্য চিকিৎসক ও নার্সদের থেকে বিষয়টি জানতে পারলাম। আমার ৩২ বছরের চিকিৎসক জীবনে এরকম জটিল রোগীর দেখা পাইনি।
“রোগীর গর্ভে পানি ছিল না বললেই চলে। তাছাড়া রোগীর ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যাও রয়েছে। মূল সমস্যাটি হল তিন মাস আগেই প্রসব হয়েছে। এত আগে বাচ্চার দেহের তেমন পরিপক্কতা আসে না। এর মধ্যে আবার গর্ভেই মৃত ছিল। এর ফলে দায়িত্বরতদের অল্প চেষ্টাতেই নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।”
এখানে নার্স বা অন্যান্য দায়িত্বরতদের তেমন অদক্ষতা বা অসচেতনতা পাচ্ছেন না বলেও তুলে ধরেন এ চিকিৎসক।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমাকে সদস্যসচিব করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।
“তদন্তে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হাসপাতালের কারোর দায় থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”