মেডিকেলে চান্স পাওয়া দরিদ্র নাজিরা-জেসমিনের পাশে বগুড়ার ডিসি

ডিসি বলেন, প্রশাসনের কাজ হচ্ছে সরকারের সব ইতিবাচক কাজ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।

জিয়া শাহীনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবগুড়া প্রতিনিধি
Published : 16 March 2023, 01:20 PM
Updated : 16 March 2023, 01:20 PM

দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অনিশ্চিতয়তার মধ্যে পড়েছিলেন বগুড়ার নাজিরা সুলতানা ও জেসমিন আক্তার। 

সেই অনিশ্চয়তা কাটাতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম। 

মেডিকেলে ভর্তির জন্য নগদ ৫০ হাজার টাকার সহায়তা নিয়ে গত বুধবার দুপুরে নাজিরার বাড়িতে হাজির হন ডিসি সাইফুল ইসলাম। 

নাজিরা সুলতানা বগুড়া জেলা সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের মেয়ে৷

তিনি ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ৭২ স্কোর নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

২০২০ সালে ছয়পুকুরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২২ সালে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নাজিরা। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পান তিনি। 

নরসুন্দর (নাপিত) নজরুল ইসলামের মেয়ে নাজিরা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চয়তা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরই আর্থিক সহায়তা নিয়ে বগুড়ার ডিসি সাইফুল ইসলাম হাজির হন নাজিরার বাড়িতে। 

নাজিরা সুলতানা বলেন, “মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু ভর্তি ও আনুষাঙ্গিক খরচের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন৷ বাবা গরিব মানুষ। এতো টাকা একসঙ্গে জোগাড় করা আমার পরিবারের জন্য অনেক কষ্টসাধ্য। এ অবস্থায় ডিসি স্যার ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন; খুব খুশি হয়েছি। এতে ভর্তি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”

সবার কাছে দোয়া চেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী নাজিরা আরও বলেন, “বাবা পেশায় নরসুন্দর হলেও নিজে কখনও লজ্জাবোধ করি না এবং নিজেকে ছোটও ভাবি না। কারণ বাবা কাজ করে সৎভাবে টাকা উপার্জন করেন।”

নাজিরার বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, “স্যারদের কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই৷ মেয়েটা আমার অনেক কষ্ট করে এ পর্যন্ত আসছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন; বড় ডাক্তার হয়ে সে যেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে।” 

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের কাজই হচ্ছে সরকারের সব ইতিবাচক কাজ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া ও জনসেবামূলক কাজ করে যাওয়া। খবর পেয়েছিলাম, নাজিরা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে। এরপর আমরা তাকে ভর্তির জন্য টাকা দিয়েছি। এটা আমাদের সেবামূলক কাজ। অন্তত এক বছর নাজিরার কলেজের খরচ আমরা বহন করব।”

এ ছাড়া মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে চান্স পাওয়া সারিয়াকান্দী উপজেলার শোলারতাইর গ্রামের লাল মিয়ার কন্যা জেসমিন আক্তারকেও একই ধরনের সহায়তা দেবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।