“ভারতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় অব্যাহত ভাবে পানি বাড়ছে।”
Published : 19 Jun 2024, 07:39 PM
ভারি বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ছয়-সাতশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তিস্তা ব্যারাজ (ডালিয়া) পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম জানান, বুধবার সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে।
এর আগে সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে।
তিনি বলেন, কাউনিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। স্বাভাবিক ২৮ দশমিক ৯৫ মিটার। একই পয়েন্টে সকাল ৬টায় ১৫ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টার পর ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানির প্রবাহ নির্ণয় করা হয়েছে।
ভারতের গজালডোবা থেকে পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান প্রকৌশলী রাশেদীন।
এদিকে, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্দ্ধন ও সদর উপজেলার খুঁনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন এলাকার আসাদুর রহমান বলেন, “বর্ষা আসলে হামারগুলোর কষ্ট শুরু হয়া যায়। নদীত পানি বাড়লে, হামারগুলার বাড়িতো পানি উঠে।”
হাতীবান্ধার ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, “মঙ্গলবার থেকে ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দুইটি ওয়ার্ডের প্রায় দুই থেকে তিনশ পরিবারের বাড়ি-ঘরে পানি উঠে জন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।”
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, “ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করে প্রায় তিন-চারশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব ওয়ার্ডের কিছু রাস্তা-ঘাটও পানিতে তলিয়ে গেছে।”
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, “ভারতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় অব্যাহত ভাবে পানি বাড়ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি।”