আগামী ৬ মাসের জন্য এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
Published : 28 Feb 2025, 11:32 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে জুলাই-অগাস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করা এক ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী ৬ মাসের জন্য এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অনুমোদিত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ বখতিয়ার এবং সদস্যসচিব হিসেবে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম মনোনীত হয়েছেন।
পরে অনুমোদিত কমিটিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সুব্রত পাল শান্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকার কথা তুলে ধরেন তার সহপাঠীরা।
তারা জানান, জুলাই বিপ্লব চলাকালে সুব্রত পাল শান্ত আন্দোলনের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান ও আন্দোলন বিরোধী কার্যক্রমে সমর্থন ও অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাই তখন তাকে সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাচের সব কার্যক্রম থেকে বয়কট ও অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাকিবুর রহমান শিশির এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেন, “যে ছেলেকে তার ব্যাচ থেকে আন্দোলনের সময় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে ছাত্রলীগ করার কারণে, সেই ছেলে কিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটিতে থাকে!?”
পোস্টে তিনি আরও লিখেন, “আপনাদের বিতর্কিত করার আমার কোনো ইচ্ছা নাই। তবে এরকমটা ঘটলে আপনাদের মধ্যে আর আগের ছাত্রলীগের কমিটির মধ্যে তফাত কই রইলো!?”
অভিযোগের বিষয়ে সুব্রত পাল শান্ত বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অধীনে সৈয়দ মুজতবা আলী হলে থাকতাম। কিন্তু সেসময় আমি ঢাকাতে এসে আন্দোলনে সক্রিয় থাকি। সেসময় ব্যাচের সহপাঠীরা আমার অবস্থান পরিষ্কার করতে বললে আমি আন্দোলনের পক্ষে আমার অবস্থান পরিষ্কার করি।”
ব্যাচ থেকে বয়কট ও অবাঞ্চিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, “তখনকার সময় এটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।
“এখন কে বা কারা আমাদের বিরুদ্ধে পোস্ট করেছে, আমি জানি না। কিন্তু যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, সেটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়াচ্ছে বলে আমি মনে করছি।”
এ বিষয়ে তার ব্যাচের ক্লাস প্রতিনিধি আরিয়ান আহমেদ বলেন, “আন্দোলনের সময় সে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় উল্টা-পাল্টা কথাবার্তা বলতো। আমাদের ব্যাচ থেকে তখন তাকে তার অবস্থান ক্লিয়ার করতে বলা হয়। কিন্তু তখন সে তার অবস্থান ক্লিয়ার করে নাই। তাই আমরা পুরো ব্যাচ থেকে তাকে বয়কট ও অবাঞ্চিত করতে বাধ্য হই।”
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির উপদেষ্টা সদস্য আসাদুল্লাহ আল গালিব ও দেলোয়ার হোসেন শিশিরকে একাধিকবার কল দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে কমিটির আহ্বায়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, “শান্তকে তার ব্যাচ থেকে অবাঞ্চিত করা হয়েছে, এটা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়ছে। কিন্তু ঝামেলাটা হয়ছে, আন্দোলনের পক্ষেও তার অনেকগুলো স্ক্রিনশট আমরা দেখতে পেয়েছি। ৩১ তারিখ পর্যন্ত দেখছি তার প্রোফাইল লাল করা।
“তবে যাই হোক, বিষয়টি একপাক্ষিকভাবে দেখার সুযোগ নাই। এখন আমরা একটি তদন্ত কমিটি করছি যে- আসলে সে জুলাই বিপ্লবের পক্ষ ছিল নাকি বিপক্ষে ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “তাকে তার ব্যাচ থেকে বয়কট করছে মানে এই না যে তার ব্যাচ যা করছে তাই ঠিক। আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে তারা আসলে কেন বয়কট করল। উভয় পক্ষের মতামত শুনে তদন্ত করে বুঝতে পারব সে আসলে দোষী কিনা।”