শুল্ক প্রত্যাহারের পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে চার দিনে ৭২৫ টন চাল আমদানি করা হয়েছে।
Published : 22 Nov 2024, 08:28 PM
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে আরও ২০৬ টন চাল আমদানি হয়েছে। এ নিয়ে চার দিনে এল ৭২৫ দশমিক ৪ টন চাল।
প্রতি টন চাল আমদানিতে ৪৩০ মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫১ হাজার ৬০০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়েছে ৫১ টাকা ৬০ পয়সা।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ভারত থেকে চাল বোঝাই ছয়টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে বলে জানান বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী রতন।
এর আগে সোমবার বন্দরে চালের প্রথম চালান আসে। এভাবে আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে চালের দাম কমবে বলে দাবি আমদানিকারকদের।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মেসার্স মাহবুবুল আলম ফুড প্রোডাক্ট, মেসার্স অর্ক ট্রেডিং, মেসার্স এস এম এস এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স সর্দার ইন্টারন্যাশনাল। আর ভারত থেকে সুধারাম আয়াত নিরায়াত প্রাইভেট লিমিটেড, কৃষ্ণা ট্রেডার্স এবং তপন ট্রেডার্স নামের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান চাল পাঠিয়েছে।
আমদানিকারকরা জানিয়েছে, চার দিনে ভারত থেকে ২১ ট্রাকে ৭২৫ দশমিক ৪ টন চাল এসেছে। আরও আসার কথা রয়েছে। প্রতি টন চাল ৪৩০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে।
সারাদেশে খুচরা বাজারে খাদ্যশস্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতকে এক মাসের মধ্যে পাঁচ লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
১৩ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. লুৎফর রহমানের সই করা এক অফিস আদেশে এ অনুমতি দেওয়া হয়। মোট ১০২টি প্রতিষ্ঠান চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, মোট চালের মধ্যে চার লাখ ২৫ হাজার টন সিদ্ধ এবং এক লাখ ৬২ হাজার টন আতপ চাল আমদানি করতে হবে; যা ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারজাত করতে হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, চাল আমদানিতে শুল্ক আরোপ থাকার কারণে বন্দর দিয়ে দীর্ঘদিন চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে সরকার। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চাল আমদানির অনুমতি পান তিনি।
“আইপি হাতে পাওয়ার পর এলসি খুলে ভারতে সেই কপি দেওয়ায় পর বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এতে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে”, বলেন তিনি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, সারাদেশে ১০২ জন আমদানিকারক চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। তার মধ্যে যশোরের মেসার্স মাহবুবুল আলম ফুড প্রডাক্ট এবং মেসার্স অর্ক ট্রেডিং কোম্পানি ১০৫ টন করে ২১০ টন।
এ ছাড়া এস এম এম এন্টারপ্রাইজ ১০০ টন চাল ইতোমধ্যে বন্দর থেকে খালাস নিয়েছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে সর্দার ইন্টারন্যাশনালের আমদানি করা ছয় ট্রাক চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। যা আগামীকাল বন্দর থেকে খালাস নিবেন বলে জানা গেছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী রতন জানান, চার দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭২৫ দশমিক ৪ টন চাল এসেছে। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর কাগজপত্র দেখে দ্রুত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সবশেষ ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর চাল আমদানি হয়েছিল। আগে চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ ভাগ ছিল; যা পরে কমিয়ে ২৫ ভাগ নির্ধারণ করে সরকার। সবশেষ ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয় সরকার।