গোপালগঞ্জে এক হাজার ২৯৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
Published : 08 Oct 2024, 10:57 AM
বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। গোপালগঞ্জে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
প্রতিমা শিল্পী, সাজসজ্জার কাজে নিয়োজিত কর্মী ও আয়োজকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ সময় রং তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে ফুটিয়ে তুলছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
রাত-দিন সমানভাবে সাজসজ্জার কাজ চলছে। দর্শনার্থী টানতে মণ্ডপগুলোকে আকর্ষণীয় ও নবরূপে সাজানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, আজকের মধ্যেই পূজা মণ্ডপের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। এখন ঢাকে কাঠি, ধূপ-ধুনচি ও পূজা-অর্চনার জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছেন পূজারিরা।
উৎসবমুখর পরিবেশে গোপালগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের।
প্রতিমা শিল্পী রাজিব সেন জানান, গেল বছর ১০টি প্রতিমা বানিয়েছিলেন তিনি। সেখানে এ বছর ছয়টি করেছেন। গেল বছরের তুলনায় এ বছর কাজ ও পারিশ্রমিকও কম বলে তিনি আক্ষেপ করেন।
আজকের মধ্যে সব কাজ শেষ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “রং তুলির কাজ নিয়ে এখন আমাদের দম ফেলার ফুরসত নেই।”
সাজসজ্জা কর্মী ফরিদপুরের ফকির আতিক বলেন, গোপালগঞ্জ শহরের বাজার যুব সংঘের গেইট, মণ্ডপ ডেকোরেশন ও আশপাশের এলাকা সাজসজ্জার কাজ তিনি ও তার দল করছেন। প্রতিটি স্থানে দৃষ্টিনন্দন কাজ করা হয়েছে। আশা করি দর্শনার্থীদেরে নজর কাড়বে।
শহরের বাজার যুব সংঘের পূজার আয়োজক দিলীপ কুমার সাহা দিপু বলেন, “বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতিতে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। তারপরও সময়ের আগে আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করব।
“৯ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আর ১৩ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।”
জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা আয়োজকদের।
পূজারি সৌরভ সাহা বলেন, “মায়ের কৃপা লাভের আশায় এখন পূজার জন্য অপেক্ষা করছি। পূজার দিনগুলোতে দেশ ও জাতির সুখ, সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করব।”
জেলার পাঁচ উপজেলায় এক হাজার ২৯৪টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় কুমার সিকদার।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৫১টি, কোটালীপাড়ায় ৩২২টি, মুকসুদপুরে ২৯৩টি, কাশিয়ানীতে ২৩৬টি এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা প্রশাসন ও মণ্ডপ কমিটির সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছি। পূজার দিনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আমরা মণ্ডপ পরিদর্শন করব।
“এ ছাড়া মণ্ডপ কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। মণ্ডপগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন হবে।”
দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সভা করে কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এক হাজার ২৯৪টি মণ্ডপে সিসি টিভি ক্যামেরা, পর্যাপ্ত আলো, ইন, আউট ও ট্রাফিকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
“পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে আলাদা সভা করে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সম্প্রীতি বজায় রাখতে মসজিদ কমিটির সঙ্গেও সভা করা হয়েছে। পূজা নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।”