লক্ষ্মীপুরে স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সন্দেহে যুবককে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

মান্দারী এলাকার এক ভবনের নিচতলার কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা ও রক্তাক্ত অবস্থায় রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2023, 08:49 AM
Updated : 18 Feb 2023, 08:49 AM

লক্ষ্মীপুরে ফার্নিচারের নকশার এক কারিগরকে হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

গ্রেপ্তার এক যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে ওই কারিগরের পরকীয়া সর্ম্পক নিয়ে সন্দেহে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান। 

কারিগর রিয়াজ হোসেন হত্যার ঘটনায় কাউছার হোসেন ও রাকিব হোসেন নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তারের পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে র‍্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। 

নিহত রিয়াজ দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতলা গ্রামের মোহাম্মদ উল্যা মিকারের বাড়ির তোফায়েল আহমেদ দুলালের ছেলে ও মান্দারী বাজারের দ্বীন ইসলাম ফার্নিচার দোকানের নকশার কারিগর।

কাউছার যাদৈয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং রাকিব তেয়াওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব অধিনায়ক মাহমুদুল জানান, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে সুযোগে কাউছারের বাসায় আসা যাওয়া ছিল ভিকটিম রিয়াজের। এতে কাউছারের স্ত্রীর সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে।

এরমধ্যে কাউছার তার স্ত্রীর সঙ্গে রিয়াজের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে সন্দেহ করে বিষয়টি রাকিবকে জানায়। তখন তারা রিয়াজকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই মাস আগে তারা সদর উপজেলার মান্দারী বাজার এলাকার উম্মে সালমা ভবনে বাসা ভাড়া নেয়। এরপর মঙ্গলবার রাতে মোবাইলফোনে কল করে রিয়াজকে সেখানে ডেকে নেয় কাউছার।

“এরপর চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে রিয়াজকে অচেতন করা হয়। পরে হাত পা বেঁধে মাথায় আঘাত ও নাকে-মুখে গামছা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে তারা। এরপরই দরজার বাইরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় কাউছার ও রাকিব।”

এরপর অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে রিয়াজের মোবাইল থেকে তার পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অভিযুক্তরা। 

এ ঘটনায় রিয়াজের মা খুরশিদা বেগম তার ছেলে অপহরণের বিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন এবং র‍্যাবের কাছে সহযোগিতা চান। 

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মান্দারী এলাকার ওই ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা ও রক্তাক্ত অবস্থায় রিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

এরপর তদন্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শুক্রবার ভোরে মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া এলাকা থেকে প্রথমে কাউছারকে আটক করা হয়। 

জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে সহযোগী রাকিবের অবস্থান নিশ্চিত করে। 

পরে র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব ১১ এর যৌথ অভিযানে চট্টগ্রাম শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে রাকিবকে আটক করা হয়। 

গ্রেপ্তার দুজনকে চন্দ্রগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই র‍্যাব কর্মকর্তা।