পিরোজপুরের নাজিরপুরে নিখোঁজের চার মাস পর বালিচাপা দেওয়া গৃহবধূর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পিবিআইয়ের পিরোজপুর কার্যালয়ের এসআই (নিরস্ত্র) রিফাত ইমরান জানান।
শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার মো. তরিকুল ইসলাম (২২) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ চিথলিয়া গ্রারেম মিজান খানের ছেলে।
এসআই রিফাত ইমরান জানান, গত সোমবার একটি চিরকুটের মাধ্যেমে চার মাস ধরে নিখোঁজ গৃহবধূর গলিত একটি লাশ জেলার নাজিরপুর উপজেলার সাতকাসেমিয়া গ্রামের একটি বালুর মাঠ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তারের ছায়াতদন্ত করে পিরোজপুরের পিবিআই।
বৃহস্পতিবার পিবিআই মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর তদন্তভার দেয় পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. বায়েজীদ আকনের উপর দেওয়া হয়।
রিফাত ইমরান জানান, তদন্তভার পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদের একটি ভাড়া বাসা থেকে তরিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তরিকুল ইসলাম দোষ স্বীকার করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসআই রিফাত বলেন, ২০১৯ সনের শেষের দিকে ভিকটিমের সঙ্গে তরিকুলের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তখন তরিকুল ইসলাম দশম শ্রেণির ছাত্র এবং মেয়েটি ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ২০২২ সালের মে মাসের শেষের দিকে মেয়েটি আসামির ঢাকার বাড়িতে ওঠে। সেখারে স্থানীয় লোকজনের চাপে তাদের বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে তরিকুলের বাবা-মার সম্মতি ছিল না। এরপর থেকে মেয়েটি বাবার বাড়ি থাকতেন। সেখানে আসামির যাতায়াত ছিল।
“বিয়ের সাত মাস পর স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়ি তুলে নিতে না চাইলে তরিকুলের সঙ্গে স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।”
এসআই রিফাত আরও বলেন, ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে তরিকুল গোপনে স্ত্রীর সঙ্গে করেন। তারা বাইরে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলেন। কথা বলার এক পর্যায়ে রাত ১২টার পর তরিকুল গলা টিপে স্ত্রীকে হত্যা করে। এরপর লাশ খালে টেনে নিয়ে বালু দিয়ে ঢাকা দেন।
রিফাত বলেন, স্বীকারোক্তিতে তরিকুল আরও বলেন, মানসিক যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে লাশ তার পরিবারের দৃষ্টিগোচরে আনার চেষ্টা করেন। ১২ মার্চ রাতে তিনি একটি চিরকুট লিখে শ্বশুরবাড়ির ঘরের চালে ঢিল মারেন। শব্দ শুনে পরিবারের লোকজন বাইরে এসে চিরকুট পান। সেখানে লাশের অবস্থা লেখা ছিল।